শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা থেকে বাঁচার উপায় ভেবে মাথা ন্যাড়ার হিড়িক!

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

করোনা থেকে বাঁচার উপায় ভেবে মাথা ন্যাড়ার হিড়িক!

কুমিল্লা নগরী থেকে গ্রাম- সর্বত্রই এখন হিড়িক পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার। অনেকে মাথা ন্যাড়ার পর নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলে তা আবার ছড়াচ্ছেন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। অনেকে মনে করেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আক্রান্ত হবে না। তবে কুমিল্লার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এটি গুজব। যারা ন্যাড়া হচ্ছেন তাদের দাবি, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে সরকারের নির্দেশে বেশির ভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। আর একই কারণে বর্তমানে সারা দেশের সব সেলুনও বন্ধ রয়েছে। এতে বেশির ভাগ মানুষ চুল ছোট করতে না পেরে ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকে আবার ভালো লাগা থেকেও ন্যাড়া হয়েছেন। আবার অনেকে পরিচিতজনের ন্যাড়া হওয়া দেখে উৎসাহিত হয়ে এ পথে হাঁটছেন। জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে কুমিল্লা নগরীসহ ১৭টি উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে পিছিয়ে নেই শিশুরাও। অভিভাবকরা সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে শিশুদের মাথাও ন্যাড়া করে দিচ্ছেন। জেলার বরুড়া পৌর এলাকার অর্জুনতলা গ্রামের তরুণ রাকিব হোসেন ও রায়হানসহ অন্তত ২০ জন মাথা ন্যাড়া করেছেন। তারা জানান, গরমের এমন সময়টাতে প্রতিবছরই দল বেঁধে একই বয়সের তরুণদের মাঝে মাথা ন্যাড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদিও চলতি সময়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে ঘরে থাকতে হচ্ছে। আর সেলুনও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাথা ন্যাড়া করেছেন তারা। এদিকে দেবিদ্বার উপজেলা গেট এলাকার রতন পাল নামে এক সেলুন মালিক জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতেও বাড়ি গিয়ে চুল ছাঁটানোর জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিয়ে আসছি। আর এজন্য একটু বেশি টাকা দিচ্ছেন তারা। বাংলাদেশ যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব) কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ময়নামতি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. গোলাম শাহজাহান বলেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটা স্রেফ একটা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। বরং মাথা ন্যাড়া করলে করোনা ছড়ানোর সংক্রমণ বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাথা ন্যাড়া করতে হলে আরেকজনের সহযোগিতা নিতে হবে। মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটাকে স্রেফ গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করে জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহাদাত বলেন, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে কান না দেওয়ার জন্য তিনি যুবকদের আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর