শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাকে পুঁজি করে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাকে পুঁজি করে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

রাজধানীর বাজারগুলোতে করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। আবারও দাম বেড়েছে পিয়াজ, আদা ও রসুনের। চালের দামও বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৭ শতাংশ এবং গত এক মাসের ব্যবধানে চালের ২৪ শতাংশ দাম বৃদ্ধির তথ্য দিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যকর অভিযান দেখতে চান সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর হাতিরপুল, নিউ মার্কেট, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর, কাওরানবাজার, মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার ঘুরে গতকাল দেখা যায়, এই ভরা মৌসুমে আবারও বেড়েছে পিয়াজ ও আদার দাম। হু হু করে বাড়ছে রসুনের দামও। তবে সবজি, ডিম ও মুরগির দাম রয়েছে স্থিতিশীল। ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি  হওয়া পিয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। দাম বেড়ে দেশি রসুন ১৪০-১৭০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও দাম নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর পাইকারি বাজার ও আড়তে অভিযান চলছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মোবাইল টিমের। গতকাল পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পিয়াজের আড়ত ও পাইকারি বাজারে অভিযান চালান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মন্ডল। তিনি বলেন, শ্যামবাজারের পাইকারি পিয়াজের আড়তে অভিযান চালানো হয়। কিছু প্রতিষ্ঠান বেশি দামে পিয়াজ বিক্রি করেছে। তাদের কাছে পিয়াজের ক্রয় রসিদ চাওয়া হয়। কিন্তু তারা ক্রয় রসিদ দেখাতে পারেননি আবার অনেকে দেখাতে রাজি হচ্ছেন না। তার মানে প্রতিষ্ঠানগুলো অনৈতিকভাবে বাজারে সংকট সৃষ্টি করে বেশি মূল্যে পিয়াজ বিক্রি করছে। তাই মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করে কারসাজির মাধ্যমে পিয়াজের দাম বাড়ানোর অপরাধে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান চলবে। তবে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। সরবরাহ রয়েছে সব ধরনের সবজির। দামও গত সপ্তাহের মতো স্থিতিশীল। বর্তমানে বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৩০ টাকা, শিম ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, পটল ৪০, শসা ৩০ টাকা, টমেটো ২৫ টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। এদিকে রমজান আসার আগেই মাংসের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির বাজার। বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, কক ১৫০ টাকা, পাকিস্তানি ২০০ টাকা, দাম কমে দেশি মুরগি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে প্রায় সব ধরনের মাছের সরবরাহ পর্যাপ্ত। দামও স্থিতিশীল। স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দামও। গত সপ্তাহের মতো ৩২ টাকা হালি দরেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। এ ছাড়া রমজানের আগে আরও একধাপ দাম বাড়ল ছোলার। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে। গত সপ্তাহের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। তবে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মসুর ডাল, চিনি, আটা, ময়দাসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্কের পর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া চালের দাম আবারও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে আট টাকা এবং মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৮ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৫৫-৬০ টাকা। করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আগে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। অর্থাৎ চিকন চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে আট টাকা এবং মাসের ব্যবধানে ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৫০ টাকা কেজি, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৮ টাকা।

সর্বশেষ খবর