মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কৃষক পিতাকে শূন্যে তুলে আছাড় মেরে হত্যা করেছে এক ইউপি সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ইছাপুরা গ্রামে। কৃষক আমানউল্লাহ গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের কৃষক আমানউল্লাহর এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের ছোটভাই কাঠমিস্ত্রি সোহরাব।
গত ১৬ এপ্রিল রাত ১১টায় আমানউল্লাহর বাড়ি গিয়ে তার মেয়েকে সোহরাব ডাকতে থাকে। এ সময় আমান ও তার ছেলেরা ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে আশপাশের বাড়ির লোকজন বেরিয়ে আসে। খুঁজতে গিয়ে সবাই দেখে সোহরাব বাড়ির পাশের ধানখেতে শুয়ে আছে। তাকে ধরে উত্তম-মধ্যম দেওয়া হয়। এ খবর পেয়ে সোহরাবের ভাই দেলোয়ারের নেতৃত্বে ১০/১২ জন রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমানউল্লাহর বাড়িতে হামলা করে। পরদিন ১৭ এপ্রিল দুপুরে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আমান বিষয়টি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ার ও তার ভাইয়েরাসহ কয়েকজন আমানকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। আমানকে শূন্যে তুলে মাটিতে আছাড় মারে দেলোয়ার। এরপর সবাই মিলে তাকে পিটুনি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ইছাপুরা গ্রামের শহীদের বাড়ির সংলগ্ন সড়কের পাশে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমানের ছেলে আনোয়ার হোসেন দেলোয়ার মেম্বারসহ আটজনের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা করেন। লালমাই থানা পুলিশ অভিযানে নেমে গতকাল দুপুরে ইছাপুরা গ্রামের ফজর আলীর ছেলে তোফাজ্জল ও আজগর আলীর ছেলে রবিউলকে আটক করে। নিহতের ছেলে আবদুল জলিল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোহরাবের চরিত্র খারাপ। তাই তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে সে আমার বোনকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এর প্রতিবাদ করায় আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে। খুনি দেলুসহ তার ভাইদের গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই।’ লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, সকালে ভিকটিমের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা শাহবাগ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করি। ইউপি মেম্বার দেলোয়ারসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
-Sylhet-23_04.jpg?v=1713875202)
