সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়া মাত্রই বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘের

প্রতিদিন ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের টিকা-ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব হলে তা বৈষম্যহীনভাবে বিশ্বব্যাপী সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সূত্র : রয়টার্স। ‘টিকা আবিষ্কার করতে পারলে বৃহৎ শক্তিগুলো তা নিজেদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে রাখবে’ বলে জল্পনা শুরু হওয়ার পর গুতেরেস এ আহ্বান জানালেন। তিনি গত শনিবার নিজের অফিশিয়াল টুইটার পেজে লিখেছেন, ‘কভিড-১৯ রোগের টিকা তৈরির জন্য একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠন করা উচিত। এরপর কাক্সিক্ষত টিকা আবিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং তার দাম রাখতে হবে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে।’ টিকা আবিষ্কারের বিষয়টিকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে জনসেবামূলক প্রকল্প হিসেবে নিয়ে কাজ করার জন্য বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুঁশিয়ারি : করোনাভাইরাস রুখতে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা উঠেপড়ে লাগলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, ‘এসব চেষ্টাতে কোনো লাভ হবে না। অদূর ভবিষ্যতে করোনার কার্যকরী কোনো প্রতিষেধক তৈরি হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ দূত ডেভিড নাবারো (David Nabarro) একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গত শনিবার  বলেছেন, ‘এটা ধরে নেওয়া ঠিক নয় যে, খুব শিগগিরই করোনাভাইরাসের কোনো কার্যকরী প্রতিষেধক তৈরি হয়ে যাবে। সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবনযাপন শিখতে হবে।’ তিনি আরও  বলেছেন, ‘সব ভাইরাসেরই যে নিরাপদ এবং কার্যকরী কোনো প্রতিষেধক তৈরি হবে- এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন অনেক ভাইরাস আছে যাদের প্রতিষেধক তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। সুতরাং আপাতত আমাদের এই ভাইরাসের বিপদের কথা মাথায়  রেখেই জীবনযাত্রা বদলে ফেলতে হবে।’ তার কথায়, ‘আমাদের এখন সাবধানতা অবলম্বন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। অর্থাৎ কারও মধ্যে এই রোগের উপসর্গ  দেখলে তাকে এবং যারা তার সংস্পর্শে এসেছেন তাদের আইসোলেট করতে হবে। বয়স্ক মানুষদের আগলে রাখতে হবে। আর এটাকেই স্বাভাবিক নিয়ম করে ফেলতে হবে।’ উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই সংস্থাটি সরকারিভাবে জানিয়েছিল করোনার টিকা তৈরি হতে আরও অন্তত ১২ মাস সময় লাগবে। এখনো মারক ভাইরাসের ওষুধ  তৈরিতে আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি। করোনার প্রতিষেধক হিসেবে ৪২টি ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এদের মধ্যে অন্তত ২টি ওষুধের অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে এবং এই দুটি ওষুধ আশা জাগাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি ঘটিয়েছে হংকংয়ের একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা।  বেইজিংয়ের একটি সংস্থাও ওষুধ তৈরির কাজে অনেকটা এগিয়ছে। তবে এগুলো বাজারে আসতে এখনো অন্তত ১২  থেকে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে।

শ্রীলঙ্কায় ভেষজ অস্ত্রে ভাইরাস বধ : করোনা মোকাবিলায় আয়ুর্বেদকে ময়দানে নামিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বিষয়টি স্বীকার করেছেন শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান ডা. টি বীরারত্ন। তিনি ভারতীয় ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে জানান,  কভিড-১৯ একেবারে নতুন রোগ। এর চিকিৎসা সম্পর্কে মডার্ন মেডিসিনের বিশেষ কোনো ধারণা এখনো নেই। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা থাকলেও কোনো ওষুধ সেভাবে বের হয়নি। যেখানে আয়ুর্বেদে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের চিকিৎসার নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। তাই সংকটজনক করোনা রোগী ছাড়া বাকিদের আয়ুর্বেদিক ওষুধই খাওয়ানো হচ্ছে। ডা. টি বীরারত্ন জানিয়েছেন, আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই জাতীয় প্রোটোকল তৈরি হয়েছে এবং খাওয়ার ওষুধের পাশাপাশি ন্যাচারোপ্যাথিও প্রয়োগ করা হচ্ছে। যেমন স্টিম ইনহেলেশন বা বাষ্পস্বেদ। নাক-মুখ দিয়ে গরম বাষ্পগ্রহণ। এতেই জব্দ হচ্ছে নোভেল করোনা। খবরে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর ডাক্তাররা এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল মেনে কভিড  রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেছেন। বীরারতেœর দাবি, আয়ুর্বেদ ওষুধ সেবনে দ্রুত সংক্রমণমুক্ত হচ্ছেন রোগীরা।  শ্রীলঙ্কার আয়ুর্বেদ নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আয়ুশসচিব ডা. রাজেশ কোটেচাও। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ?্য আমাদের কাছে নেই। তবে ভারতের প্রটোকল অনুসরণ করে কভিড চিকিৎসায় শ্রীলঙ্কা আয়ুর্বেদ ব?্যবহার করলে তা হবে নতুন দৃষ্টান্ত।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর