করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখে দিতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি কর্মহীন মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি ব্যস্ত ফেসবুক নিয়ে। ‘লাইভ হেলথ শো’ নামে একটি প্রোগ্রামে এসে দিচ্ছেন হেলথ টিপস্। এমন দুঃসময়ে মাঠে নেই আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। ঘরে বসেই তার কাটছে সময়।
চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘রাজনীতিকের পরীক্ষা হয়ে থাকে দুঃসময়ে। দুঃসময়ে নিজের নিরাপত্তার চিন্তা করে যারা জনগণ থেকে দূরে থাকেন তারা কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হতে পারেন না। আমি চেষ্টা করেছি এমন দুর্যোগ মুহূর্তে জনগণের পাশে থাকতে। এরই মধ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ১৩ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে আসা ত্রাণসামগ্রীর সুষ্ঠু বিতরণ করছি।’
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “লাইভ হেলথ শো” নামে একটি শো করছি। ওই লাইভে নিয়মিত দেড় থেকে দুই লাখ ভিউয়ার হয়। এ ছাড়া এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি।’ রেজাউল করিম চৌধুরীর দাবি- ‘ঘরে বসেই ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছি। এরই মধ্যে ১৩ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি। নেতা-কর্মীরা আমার হয়ে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।’দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির শুরু থেকেই অগ্রসৈনিক হিসেবে মাঠে রয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র নাছির। শুরুতে জীবাণুনাশক পানি ছিটাতে নিজেই নেমে পড়েন রাস্তায়। মাইকিং করে জনসচেতনতা তৈরি, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে উদ্যোগ গ্রহণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, চিকিৎসকদের জন্য পিপিই ও বিভিন্ন সরঞ্জাম বিতরণ করেছেন ব্যক্তিগত ও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে। এর বাইরে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে। দোরে দোরে গিয়ে তিনি নিজেই এসব ত্রাণসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দিয়েছেন নাছির। এ ছাড়া বিতরণের জন্য তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের হাতেও এসব ত্রাণসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আসা ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করা হচ্ছে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনও রয়েছেন মাঠে। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে মাঠে সক্রিয় হন এই চিকিৎসক নেতা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগরবাসীকে ত্রাণও বিতরণ করছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ২০ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে তার। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতি ও রোগ নিয়ে নগরবাসীকে নানান পরামর্শ দিতে নিয়মিত ফেসবুক লাইভে আসছেন। সিটি নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর কয়েকদিন মাঠে সক্রিয় ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী। জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানো, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারও বিতরণ করছেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি এক প্রকার নিষ্ক্রিয়। ঘরেই অবস্থান করছেন। অবশ্য বলছেন, ঘরে বসেই তিনি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।