বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

রেশন কার্ড কর্মসূচিতে আরও ৮৭৫ কোটি বরাদ্দ

রোজা শুরুর আগেই আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড ইস্যু করা হচ্ছে, প্রত্যেক কার্ডধারী ভর্তুকি মূল্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারবেন

মানিক মুনতাসির

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বেকার হয়ে পড়া নিম্নবিত্ত, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা দিতে আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড চালু করতে যাচ্ছে সরকার। আসন্ন রমজান শুরুর আগেই নতুন করে ৫০ লাখ পরিবারকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতা বাড়াতে আরও ৮৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থবিভাগ। এ টাকা দুর্যোগ  ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অনুকূলে ছাড় করে গতকালই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর আগে এ কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবার সুযোগভোগী হিসেবে রেশন সুবিধা পেয়ে আসছে। তাও বহাল রয়েছে। অর্থবিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী করোনাভাইরাসের মহামারী মোকাবিলায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা দিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারা দেশে ৫০ লাখ নতুন রেশন কার্ডধারীদের সরবরাহের জন্য ২ লাখ টন চাল সংগ্রহ করা হবে জরুরি ভিত্তিতে। এ জন্যই মূলত এই ৮৭৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থবিভাগ। গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামালের জরুরি অনুরোধ অনুসারে অর্থবিভাগ এ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এখন ৫০ লাখ স্বল্প আয়ের রেশন কার্ডধারী মানুষের জন্য চাল প্রতি কেজি ভর্তুকি মূল্যে ১০ টাকা দামে বিতরণ করছে। রেশন কার্ড কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন চাল রেখেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় অতিরিক্ত আরও দুই লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে এ কর্মসূচির জন্য। জানা গেছে, রোজার প্রথম দিন থেকেই এ কর্মসূচিতে নতুন করে যুক্ত হওয়া ৫০ লাখ পরিবার এ সুবিধা ভোগ করতে পারেবন। ইতিমধ্যে তাদের তালিকা করে প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়েছে। এদিকে গত সপ্তাহে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ও পিপিআরসির প্রকাশিত এক জরিপের তথ্যমতে করোনাভাইরাসের কারণে যে সাধারণ ছুটি চলছে এতে সাধারণ মানুষের আয় ৮০ শতাংশ কমেছে। একইভাবে চলতি মাসের শেষে দরিদ্র শ্রেণির প্রায় ৬ কোটি মানুষের খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে। এদেরই মূলত এ রেশন কার্ড কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসতে নতুন করে ৫০ লাখ পরিবারকে তালিকাভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ইতিমধ্যেই সংকটের মধ্যে ঢুকে গেছে। চলতি মাসের শেষে সেটা প্রকট আকার ধারণ করবে। তাদের জন্য সরকারের উচিত হবে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি চালু করা। এ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে একইভাবে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী নতুন করে দারিদ্র্যের কষাঘাতের মধ্যে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর