শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
বন্দর সচল রাখতে যত উদ্যোগ

পরিবহন, কনটেইনার জট ডলার সমস্যার কথা ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রমজান সামনে রেখে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে গতকাল সচিবালয়ে নিত্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সঙ্গে জরুরি সভা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা সংকটের মধ্যে রোজা শুরু হওয়ায় পণ্যের চাহিদা বাড়লেও এ সময় নিত্যপণ্য আমদানিতে তারা সমস্যায়     পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে বেশি মূল্যে এলসি করতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। পাশাপাশি বন্দরে কনটেইনার জটের কারণেও পণ্য খালাসে ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পণ্য পরিবহনেও প্রয়োজনীয় ট্রাক পাচ্ছেন না তারা। এ অবস্থায় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- ডলারের মূল্য বাড়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি পাঠাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে সৃষ্ট কনটেইনার জট নিরসনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত পণ্য খালাসের উদ্যোগ নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে গতকাল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভা সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্ত হচ্ছে- সারা দেশে নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং রমজানে খাদ্যসামগ্রী পরিবহনে  যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য স্থানীয় পর্যায়ে পরিবহন ব্যবস্থা করা; টিসিবির ট্রাকসেল পুনঃবিন্যাস করা;  নিত্যপণ্যের বাজার দর সিটি করপোরেশনকে সরবরাহ করার বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা; জেলা প্রশাসন (ঢাকা) কর্তৃক রমজান উপলক্ষে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা; ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় পরিচালিত টিসিবির পণ্য বিক্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ;  সারা দেশে পাইকারি বাজার চালু করা;  কভিড-১৯ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দেশের বাজারে বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ ওষুধ সামগ্রীর বিকল্প বাজার সন্ধানে এখন থেকেই প্রস্তুতিগ্রহণ এবং সারা বছর টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য  যেমন চাল, ডাল, তেল, ছোলা, পিয়াজ, রসুন ও আদাসহ সব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কোনো পণ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই। কৃত্রিম উপায়ে কেউ পণ্যে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সারা দেশে ৯০টি বাজার মনিটরিং টিম নিয়মিত বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ছাড়া টিসিবির কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য ঢাকায় ৮টি এবং ৬৪ জেলায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। সভায় ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান তপন কান্তি ঘোষ, জাতীয়  ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. ওবায়দুল আজম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রি. জে. মো. হাসান জাহাঙ্গীর, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, ডিজিএফআই, এনএসআই, স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ডিএমপির প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি এবং নিত্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও দোকান মালিক সমিতির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর