সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বাউফলে শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

তুচ্ছ ঘটনার জেরে পটুয়াখালীর বাউফলে ঘুমন্ত অবস্থায় মো. রেদোয়ান সিকদার (১৯) নামের এক কলেজ ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি ঘাতকের দল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিহত রেদোয়ানের দুই হাতের রগও কেটে দিয়েছে ঘাতকরা। এ সময় নিহতের দুই ছোট ভাই আবদুল্লাহ সিকদার (১৬) ও মো. ফয়সালকেও (১২) কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই ভাইয়ের মধ্যে ফয়সালকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও আবদুল্লাহকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনায় জড়িত মূল হোতা ইমরানের (১৭) মা শাহিদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বাউফল থানা পুলিশ। শিবপুর গ্রামের নুর সিকদারের ছেলে রেদোয়ান কালিশুরী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। আবদুল্লাহ কালিশুরী এসএ ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ফয়সাল স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। স্থানীয়রা ও নিহতের স্বজনরা জানান, কিছু দিন আগে পরিধেয় কাপড় রৌদ্রে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাশের বাড়ির আলম খানের স্ত্রী শাহিদা বেগমের (৪০) সঙ্গে রেদোয়ানের বড় ভাই দিনারের স্ত্রী রেশমা বেগমের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাহিদা বেগমের ছেলে ইমরানের সঙ্গে আবদুল্লাহর হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে ইমরানের নেতৃত্বে নৃশংস হত্যাকাে র ঘটনা ঘটানো হয় বলে দাবি নিহতের স্বজনদের। নিহতের ভাবি রেশমা বেগম জানান, শনিবার রাতে ওরা তিন ভাই একসঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন। পাশের কক্ষে তিনি তার শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে ইমরানের নেতৃত্বে ঘরে ঢুকে তার কক্ষ বাইরে থেকে আটকে দেয়। এরপর রেদোয়ানকে সাবল দিয়ে আঘাত করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। অচেতন হয়ে পড়লে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই হাতের রগ কেটে দেয়। ওই সময় তার সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকা ছোট দুই ভাই আবদুল্লাহ ও ফয়সাল চিৎকার করলে তাদেরও কুপিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে ফয়সাল তার (রেশমা) কক্ষের দরজা খুলে দিলে তিনি বের হয়ে ইমরানকে চলে যেতে দেখে চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। পরে স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত তিন ভাইকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেদোয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আবদুল্লাহ ও ফয়সালকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। আবদুল্লাহর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পটুয়াখালীর বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

 

সর্বশেষ খবর