মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

আইসিসিবিতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় হাসপাতাল

করোনা চিকিৎসায় যত দিন প্রয়োজন ব্যবহার করবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইসিসিবিতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় হাসপাতাল

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দেশের বৃহত্তম করোনা আইসোলেশন সেন্টারটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। কনভেনশন হল ও ট্রেড সেন্টার মিলে বসানো হয়ে গেছে অন্তত ১ হাজার ৭০০ শয্যা (বেড)। কিছু বেড অ্যাসেম্বল (বিভিন্ন অংশ যুক্ত করা) করে বসানো ও কয়েকদিন ঝড়বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হওয়া টয়লেট নির্মাণের টুকটাক কাজ ছাড়া তেমন কিছুই বাকি নেই। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর চাইলেই এখন বুঝে নিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করে দিতে পারে। অধিদফতর থেকে উদ্বোধনের তারিখ দিলে বাকি কাজ শেষ করতে সর্বোচ্চ দরকার হবে আধাবেলা। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন আইসিসিবি ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। গতকাল সকালে আইসিসিবি প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেড সেন্টারের অধিকাংশ জায়গায় বসানো হয়েছে বেড ও আসবাব। চিকিৎসক ও নার্সদের কক্ষ, পর্যবেক্ষণ ডেস্ক, হেল্প ডেস্ক- সবকিছুই সাজানো হয়ে গেছে। অল্প কিছু জায়গা ফাঁকা রয়েছে। তাঁবুর বাইরে বেডের বিভিন্ন অংশ যুক্ত করা হচ্ছে। এরপর সেগুলো এনে পূরণ করা হচ্ছে সেই ফাঁকা জায়গা। কর্মরত শ্রমিকরা বললেন, আড়াই শর মতো বেড বাকি আছে অ্যাসেম্বল করতে। এগুলো হলেই বেডের কাজ শেষ। এ ছাড়া তাঁবুর বাইরে কয়েকটি টয়লেট নির্মাণে চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। শ্রমিকরা জানালেন, বৃষ্টি না হলে এক দিনের মধ্যেই এগুলোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম গতকাল বলেন, ‘দ্রুত হাসপাতাল নির্মাণ করতে আমরা রাত-দিন কাজ করেছি। তিন দিন বৃষ্টি হওয়ায় খোলা আকাশের নিচের কাজগুলো কিছুটা পিছিয়ে গেছে। নইলে কাজ আরও আগেই শেষ হয়ে যেত। তবে বড় কোনো কাজ বাকি নেই। এ মাসের মধ্যেই এখানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাবে।’ আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালের কাজ বলা যায় শেষ। আমরা বসুন্ধরা থেকে চাইছি যত দ্রুত সম্ভব এখানে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা যায়। কারণ, করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এখন স্বাস্থ্য অধিদফতর উদ্বোধনের তারিখ দিলে টুকটাক যেটুকু কাজ বাকি আছে তা শেষ করতে আধাবেলার বেশি লাগার কথা নয়। গত রবিবার আমরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম উদ্বোধনের তারিখের ব্যাপারে। তারা বলেছে শিগগিরই জানাবে। মূলত হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্টিং স্টাফ এগুলোর ব্যবস্থা করে উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আমরা বুঝিয়ে দিতে প্রস্তুত।’ তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে ২ হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

 

সর্বশেষ খবর