বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা সংকটেও বিশ্ববাজারে সুযোগ খুঁজছে সরকার

সম্ভাব্য পণ্য ও সেবা রপ্তানির তালিকা চেয়ে দূতাবাসের চিঠি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ায় বদলে গেছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের চাহিদা। ফ্যাশনেবল পোশাক কিংবা পছন্দের মোবাইল ফোনের চেয়ে এখন বেশি চাহিদা দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্য নিরাপত্তাজনিত পণ্যের। ইউরোপ-আমেরিকা ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে করোনা প্রতিরোধী মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজার, কিট, ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল ইকুইপমেন্টের জন্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আর পরিবর্তিত এই বিশ্বব্যবস্থার চাহিদার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য ও সেবা চিহ্নিত করে, সে অনুযায়ী রপ্তানিকারকদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে বিশ্বের বিভন্ন দেশের দূতাবাসগুলোতে কর্মরত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ওই চিঠিতে কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছে, তারা যেন সংশ্লিষ্ট দেশগুলো যে ধরনের পণ্য আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করবে- তার স্পেসিফিকেশন, আমদানিকারকদের তালিকাসহ এসব পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করতে যেসব উদ্যোগ নেওয়া উচিত- সে বিষয়ে ৪ মে-এর মধ্যে একটি প্রতিবেদন পাঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কভিড-১৯’ পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী যে সংকট সৃষ্টি করেছে, সেটি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের চাহিদার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। স্বাভাবিকভাবে প্রয়োজনীয় বা বিলাসী পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। কমে গেছে তৈরি পোশাকের চাহিদাও। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ক্রেতারা বিলিয়ন ডলারের পোশাকের অর্ডার বাতিল করছেন। এ অবস্থায় আমাদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন পণ্য ও সেবা রপ্তানির সুযোগ খুঁজতে হবে। সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ, বাংলাদেশ থেকে  মেডিকেল ইকুইপমেন্ট নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। মালয়েশিয়া হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নেওয়ার জন্য কূটনৈতিকভাবে চিঠি পাঠিয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও যেসব পণ্য রপ্তানির সুযোগ আছে সেটি আমরা নিতে চাইছি। এ লক্ষ্যেই কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের নতুন পণ্যের তালিকা পাঠানোর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও বায়ারদের সঙ্গে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন পণ্য ও সেবা রপ্তানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ড, বায়ার, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য টেলি/ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করবে তারা। ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখতেও বলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘শারীরিক সুস্থতা সুরক্ষার পাশাপাশি দেশের প্রয়োজনে বিশ্ব বাণিজ্য পরিমন্ডলে বিভিন্ন দেশে পণ্য ও সেবার চাহিদার অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করা দরকার। বিশেষ এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের প্রথাগত পণ্যের রপ্তানি কমে যাচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী রপ্তানি আয় অব্যাহত রাখতে বিশ্ববাজারে নতুন চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পণ্য ও সেবা রপ্তানির জন্য দেশের রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর