ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেছেন, কভিড-১৯ এর প্রভাবে সারা বিশ্ব এখন খুবই সংকটময় সময় পার করছে। এত খারাপ সময় বোধ হয় বিশ্ব আর কখনো পার করেনি। এটা একটা বৈশি^ক সমস্যা। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কর্মহীনতা সব সময় আমাদের জন্য একটা অভিশাপ। যে কোনো দেশকে পিছিয়ে দেয় এই বেকারত্ব। আর এবারের সংকটটা একটা নতুন সংকট। এটার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। কেউ বুুঝতেও পারিনি যে এতটা ভয়ঙ্কর হবে। এটা এক ধরনের সামাজিক যুদ্ধ, অর্থনৈতিক যুদ্ধ, এমনকি এটা জীবনের যুদ্ধ। এ যুদ্ধে যারা জিতবে, তারাই বেঁচে থাকবে।
জিনাত হুদা বলেন, এই যুদ্ধে জয়ী বেঁচে যাওয়াদের আবার শুরু হবে নতুন করে যুদ্ধ। যেখানে অস্থির এই বিশ্ব পরিমন্ডলে কাজের জন্য হাহাকার তৈরি হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আগাম সতর্কতা দিচ্ছে। আর সংকট বাড়লে অপরাধও বাড়ে। এবারের সংকট হবে বেকারত্ব আর কাজের সংকট, যা শেষ পর্যন্ত খাদ্য সংকটের দিকে নিয়ে যাবে। এটা খুবই স্পর্শকাতর যে, মানুষ খাবারের জন্য যুদ্ধ করবে। ফলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ এখনই নেওয়া প্রয়োজন। একদিকে ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার পৌঁছে দিতে হবে নিশ্চিতভাবে। মানুষ যেন কোনোভাবেই এটা ধারণা করে ফেলতে না পারে যে সে না খেয়ে মারা যাবে।
তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। এতে মানুষের কুৎসিত চেহারাটা বেরিয়ে আসবে সামনে। তখন মানুষের মধ্যে হানাহানি বাড়বে। এমনকি খাবারের জন্য একজন আরেকজনকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করবে না। ফলে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্র, সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজপতি, শিল্পপতি, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ের একটি সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। যারা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ তাদের খাদ্য চাহিদা মেটাতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। তৈরি পোশাক খাত খুলে দেওয়া হয়েছে। এটা বোধ হয় এই মুহূর্তে খুলে দেওয়া ঠিক হয়নি। আর কিছুটা অপেক্ষা করা উচিত ছিল। ফলে আমাদের সামনে অনেক সমস্যা, অনেক সংকট কিন্তু এসবের উত্তর আমরা জানি না। অর্থাৎ উত্তরবিহীন প্রশ্নই এখন আমাদের সামনে।