রবিবার, ৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রস্তুতি সম্পন্ন, কাল উদ্বোধন বসুন্ধরায় হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস আক্রান্তের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত দেশের বৃহত্তম অস্থায়ী হাসপাতালটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ইতিমধ্যে পরিচালক পদায়ন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামীকাল (৪ মে) হাসপাতালটি উদ্বোধন করার কথা। সেই অনুযায়ী হাসপাতালটিতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা ও সরঞ্জামাদি পরীক্ষার কাজ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতাল প্রস্তুত, তবুও সবকিছু আরেকবার পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম বারে বারে চালিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শেষবারের মতো দেখে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যুতের সংযোগগুলো। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। আর আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দিতে গত ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে সব ধরনের সরঞ্জাম ও ফার্নিচার বসানো হয়ে গেছে। শুধু আইসিইউ হতে কয়েকটা দিন সময় লাগবে। তবে এখন যে কোনো সময় রোগী এলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। বলা যায় হাসপাতাল প্রস্তুত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৪ মে উদ্বোধনের কথা বলা হয়েছে। সেই লক্ষ্য নিয়ে শেষবারের মতো সবকিছু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখন চলছে মূলত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। এখানে বড় একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। সেটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দিতে চাচ্ছি। এ ছাড়া সবগুলো বিদ্যুৎ সংযোগ আবারও পরীক্ষা করা হচ্ছে। উদ্বোধনের আগে সবকিছু ফের যাচাই করে দিতে চাইছি। হাসপাতালটি ৪ তারিখেই হস্তান্তর হবে কিনা- এমন প্রশ্নে আইসিসিবির এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা কনফারমেশন এখনো পাইনি। ৪ তারিখে উদ্বোধনের কথা, ২ তারিখেও নিশ্চিতভাবে কিছু জানানো হয়নি, মনে হয় দু-এক দিন দেরিও হতে পারে। তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে ২ হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। গতকাল আইসিসিবিতে নির্মিত হাসপাতাল চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসক ও নার্সের চেম্বার, হেল্প ডেস্ক, বেড বসানো- সব কাজ শেষ। বেডগুলোতে বেডসিট, ডাস্টবিন, স্যালাইন হ্যাঙ্গারসহ আনুষঙ্গিক সাপোর্টও বসানো হয়েছে। টয়লেট নির্মাণও শেষ। বসানো হয়েছে আসবাবপত্র। কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর