রবিবার, ৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

মানুষের বন্ধু খয়রা মেছো পেঁচা

আলম শাইন

মানুষের বন্ধু খয়রা মেছো পেঁচা

অতি পরিচিত পাখি। নিশাচর বলে সুলভ দর্শন হলেও নজরে পড়ে কম। বেশির ভাগই রাতে বিচরণ করে। বিকালের দিকেও গ্রামাঞ্চলে কমবেশি নজরে পড়ে। ঝড়-বাদলের সময় দিনে শিকারের উদ্দেশ্যে মৎস্য খামারের আশেপাশে অবস্থান নেয়। তবে বেশির ভাগই রাতের আঁধারে জলাশয়ের আশপাশে ঘুরঘুর করে কিংবা জলার ওপর নুয়ে পড়া গাছের ডালে বসে শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে। গম্ভীর সুরে ভৌতিক আওয়াজ করে, ‘ভূত-ভূত- ভুতুম’। সাঁঝের বেলায় হঠাৎ ডেকে উঠলে যে কারোরই গা শিহরে ওঠে এক অজানা আশঙ্কায়। পারতপক্ষে তখন ওই জঙ্গলের আশপাশে কেউ ভেড়ে না। দেখতে ভয়ঙ্কর হলেও এরা অত্যন্ত নিরীহ প্রজাতির পাখি। লাজুকও বটে। দিনের বেলায় বড় গাছের পাতার আড়ালে কিংবা গাছের কোটরে লুকিয়ে থাকে। গেছো ইঁদুর-সাপ শিকার করে মানুষের উপকার করে। মানুষও এদের খুব একটা ক্ষতি করে না। তারপরও এ প্রজাতির পাখির সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। বড় পুরনো গাছ কিংবা পুরনো দরদালানের অভাবে এদের প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে প্রজাতিটি। পাখির বাংলা নাম : ‘খয়রা মেছো পেঁচা’, ইংরেজি নাম : ‘ব্রাউন ফিশ আউল’ (Brown Fish Owl) বৈজ্ঞানিক নাম : Ketupa zeylonensis। এরা ‘ভুতুম পেঁচা’ নামেও পরিচিত। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৫২-৫৫ সেন্টিমিটার। মাথা, ঘাড় গলায় কালোর ওপর সাদা ছোপ। মাথার দুই পাশের পালক খানিকটা লম্বা বলে তা কানের মতো মনে হয়। পিঠে বাদামি-কালো টান। বুক, পেটে রয়েছে হালকা বাদামি-কালো লম্বা টানের ছিট। চোখ গোলাকার বড়সড়ো, জলজল করে। পা ফিকে হলদে। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। প্রধান খাবার : মাছ। এ ছাড়াও ব্যাঙ, ইঁদুর, ছোট সাপ শিকার করে। প্রজনন মৌসুম জানুয়ারি থেকে এপ্রিল। বাসা বাঁধে গাছের প্রাকৃতিক খোড়লে অথবা পুরনো দালানের ফোকরে। ডিম পাড়ে ১-২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩০-৩৫ দিন।

সর্বশেষ খবর