মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি করোনা রোগী

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

করোনাভাইরাস কেড়ে নিল আরও দুই প্রবাসীর প্রাণ। ৩ মে তারা মারা গেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১ প্রবাসীর প্রাণ গেছে করোনা মহামারীতে। হাসপাতাল ও স্বজনদের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আবদুুর রহিম হাওলাদার ও সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিদ্দিকী জানান, টানা ১৪ দিন নিউইয়র্কের কর্নেল হাসপাতালে মৃত্যুযন্ত্রণায় ভুগে ৩ মে ভোর ৬টায় মারা যান রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সমীর চন্দ্র দেব (৫৪)। একই দিন বিকাল সোয়া ৫টায় এলমহার্স্ট হাসপাতালে মারা যান ইস্ট এলমহার্স্ট এলাকার অধিবাসী মৌলভীবাজার জেলার সন্তান আলহাজ কয়সর আহমেদ (৭২)। আরও জানা গেছে, নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্টেটের হাসপাতাল ও বাসায় এখনো ৫ হাজারের অধিক প্রবাসী করোনার চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে বলে যেসব স্টেটে লকডাউনে শিথিলতা আনা হয়েছে, তার অধিকাংশেই গত তিন দিনে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার বেড়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা জানান। গত কয়েক দিনে যে ৩০ স্টেটে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে তার কোথাও সিডিসির নির্দেশ অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার দূরের কথা, সামাজিক দূরত্বও বজায় রেখে কেউ চলাফেরা করছে না। এগুলো প্রধান প্রধান টিভিতে ফলাও করে প্রদর্শন করা হচ্ছে। ফলে বেশ কটি স্টেটে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার বেড়েছে। নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো ৩ মে তার নিয়মিত করোনা ব্রিফিংকালে বলেন, ‘বিজ্ঞানসম্মত পরিসংখ্যান ও বাস্তবতার আলোকে আমরা নিউইয়র্কসহ আশপাশের সাত স্টেটে লকডাউন শিথিল করার কথা ভাবব। এখনো সে অবস্থা তৈরি হয়নি।’ তিনি নিকট প্রতিবেশী বেশ কটি স্টেটের গভর্নরকেও ভিডিও কনফারেন্সে একত্রিত করেন ব্রিফিংকালে। তারা সমস্বরে বলেন, ‘হাসপাতালে কমপক্ষে ৩০% সিট খালি থাকতে হবে এবং পিপিইর মজুদ পর্যাপ্ত থাকতে হবে। এজন্য আমরা ৫ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল রচনা করছি। তা দিয়ে অতি জরুরি সাজসরঞ্জাম কিনব। তারপর দেখব, আক্রান্ত ও মৃতের হার কমা অব্যাহত আছে কিনা।’ উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ ২৪ ঘণ্টায় মোট ২৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৯৯। হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তির সংখ্যা ৯০০ থেকে কমে ৭৮৯ হয়েছে। নিউজার্সি, কানেকটিকাট, পেনসিলভেনিয়া, ডেলওয়ার, রোড আইল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস স্টেটেও ক্রমান্বয়ে করোনার প্রকোপ কমছে। সুপার হিরো : ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) সংকট উপেক্ষা করেই জীবন বাজি রেখে করোনা আক্রান্তদের সেবা দিচ্ছেন নিউইয়র্কের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। মানবসেবার ব্রত নিয়ে রোগীদের নজিরবিহীন সেবা প্রদানের জন্য বেশ কয়েক ডজন চিকিৎসক-নার্সের প্রাণ গেছে। তবু তারা দমেননি। মানবতার জন্য এভাবে কর্মরত চিকিৎসক/স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন নিউইয়র্কবাসীর কাছে ‘সুপার হিরো’। এসব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রায় প্রতিটি হাসপাতালের সামনে বড় বড় ব্যানারে লিখে রেখেছে ‘তোমাদের ধন্যবাদ’।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর