বুধবার, ৬ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সর্দি কাশি শ্বাসকষ্ট নিয়ে আরও ১২ জনের মৃত্যু

ঢামেক করোনা ইউনিটেই মারা গেলেন সাতজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা সন্দেহে ভর্তি হওয়া সাত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এদের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারও মধ্যে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ঢামেক সূত্র। এ ছাড়া সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও পাঁচজন মৃত্যুবরণ করেছেন। মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর ও নোয়াখালীতে এসব মৃত্যু হয়েছে। সব মিলে গতকাল করোনা উপসর্গ নিয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাগুলোতে। তাদের বাড়িঘর এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে গত শনিবার থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন দিনে মারা যান ২৬ জন। এর মধ্যে চারজন ছিল পজিটিভ। সব মিলিয়ে করোনা ইউনিটে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ জনে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- সারোয়ার (৩৪)। তার বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুরে। তিনি সোমবার ভর্তি হন। রাত সাড়ে ১২টায় তিনি মারা যান। শহিদুর রহমান (৪৮), তার বাসা রাজধানীর নাখালপাড়ায়। সোমবার রাত আড়াইটায় তিনি মারা যান। আবদুল হাই (৮৩), বাসা লালমাটিয়ায়। গতকাল সকাল পৌনে ৬টায় তিনি মারা যান। আবদুল মতিন (৬০), বাসা উত্তরায়। ভর্তি হয়েছিলেন সোমবার রাত ১২টায়। গতকাল পৌনে ৮টায় তিনি মারা যান। বাদশা মিয়া (৭০), তার বাসা যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইলে। গতকাল সকাল ৮টায় মারা যান তিনি। জাকির হোসেন (৪৫), তার বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। তারও মৃত্যু হয় গতকাল সকাল ৮টায়। আবুল হোসেন (৪৫), তার বাড়ী গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় তিনি মারা যান।

জেলায় জেলায় মৃত্যু : নোয়াখালীতে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে সেনবাগ ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সেনবাগ উপজেলার ছাতাপাইয়া ইউনিয়নে মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ২৫ বছর, আর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৩২ বছর। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ওই দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সেনবাগে মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বেগমগঞ্জে মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। মৃত্যুর তিন ঘণ্টা পর খবর পাওয়ার কারণে নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

এ নিয়ে গত দুই দিনে করোনার উপসর্গ নিয়ে জেলায় চারজনের মৃত্যু হলো। করোনা উপসর্গ নিয়ে মুন্সীগঞ্জে দুজন মারা গেছে। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জে সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা এক যুবকের গতকাল দুপুর ৩টার দিকে মারা গেছেন। আর শ্রীনগরে করোনা উপসর্র্গ নিয়ে দুই বছরের শিশু মারা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে আক্রান্ত চাচার সংস্পর্শে আসার কারণে উপজেলার সমসাবাদ এলাকায় ওই শিশুটি আক্রান্ত হয়। গত ২ মে তার চাচার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, শিশুটি করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যায়। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে তার দাফন হয়েছে। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার অলিপুর গ্রামে করোনাভাইরাস উপসর্গে মো. শহীদ উল্যাহ (৬৫)-এর মৃত্যু হয়েছে। গত দুই দিনে হাজীগঞ্জ উপজেলায় উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হলো দুজনের। একজন পুরুষ ও একজন নারী। হাজীগঞ্জ উপজেলা সদর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম মীর জানান, শহীদ উল্যাহ গত কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথায় ভুগছিলেন। সোমবার দিবাগত রাতে তার পাতলা পায়খানা ও বমি হয়। রাত সাড়ে ১২টায় বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর