বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

নিরাপদ সবজির গ্রাম

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

নিরাপদ সবজির গ্রাম

পরিবেশবান্ধব, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ছাড়াই নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষ করেন দিনাজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শুশুলী গ্রামের চাষিরা। মানুষকে বিষমুক্ত শাক-সবজি খাওয়াতে পেরে তারাও যেমন আনন্দিত, তেমনি দাম ভালো পাওয়ায় লাভবানও তারা। এই প্রচেষ্টার কারণে গ্রামটি এখন ‘নিরাপদ সবজির গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে। এখানের ১২০ জন চাষি এবার তাদের জমিতে চাষ করেছেন বিষমুক্ত করলা, বেগুন, শসা, চালকুমডা, পটলসহ বিভিন্ন সবজি। সরেজমিন দেখা যায়, ওই গ্রামের চারদিকে সবুজ সবজির খেতে ভরা। খানসামার শুশুলী, ফরিদাবাদ এবং বাসুলী গ্রামের ৩৫ একর জমিতে চাষ হচ্ছে বিষমুক্ত এসব সবজি। বিষমুক্ত শাক-সবজি খাওয়ার কথা যখন ভাবাই যায় না সেখানে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের শুশুলী গ্রামের চাষিরা। কৃষকরা উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ভোক্তাকে বিষমুক্ত শাক-সবজি খাওয়ানোর সংকল্প নেন। জমিগুলোয় দেখা যায়, প্রতি জমিতে মাঝে মাঝে সেক্সফেরোমন ফাঁদ। এটি হচ্ছে কীটপতঙ্গ দমন পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে প্লাস্টিক বক্স ব্যবহার করা হয়। যার দুই পাশে তিন কোণা ফাঁক থাকে। পুরুষ পোকাকে আকৃষ্ট করতে স্ত্রী পোকার শরীর থেকে নিঃসৃত এক রকম রাসায়নিক পদার্থ বা স্ত্রী পোকার গন্ধ ব্যবহার করা হয় ফাঁদে। এর আকর্ষণে পুরুষ পোকা ফাঁদের দিকে ধেয়ে আসে এবং ফাঁদে পড়ে মারা যায়। এতে জমির ফসল নিরাপদ থাকে। সেক্সফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করায় জমির ফসল নিরাপদ থাকছে। এ ছাড়াও তারা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ব্যবহার করছে জৈব সার ও ভার্মি কম্পোষ্ট সার। এতে খাদ্যমান ও পুষ্টি সঠিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। চালকুমড়া চাষি রশিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের কাছ থেকে জানতে পারি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে জমির ফসল বিষে পরিণত হয় এবং মাটির উর্বরতা কমে যায়। এ কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভোক্তাকে আর বিষ খাওয়াব না। বর্তমানে আমাদের গ্রামের সবাই নিরাপদ সবজি চাষাবাদে সংকল্পবদ্ধ হয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, প্রতিটি উপজেলায় নিরাপদ সবজিগ্রাম করার বিভাগীয় নির্দেশনা রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বাসুলী, শুশুলী ও ফরিদাবাদ গ্রামের কৃষকদের সংগঠিত করে জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসম্মত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসম্মত ফসল উৎপাদনের সুফল বুঝতে পেরে কৃষকরা সহজেই এই পদ্ধতি গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর