বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

রিক্রুটে নব্য জেএমবির টার্গেট যারা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ফের তৎপরতার ধরন পরিবর্তন করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি। নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে প্রগতিশীল পরিবারের সন্তান এবং নিম্ন আয়ের মানুষ রিক্রুটের টার্গেট করে মাঠে নেমেছে এ সংগঠন। চট্টগ্রাম ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলার অভিযোগে গ্রেফতার নব্য জেএমবির তিন সদস্য জিজ্ঞাসাবাদে সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে এমনই তথ্য দিয়েছেন। নব্য জেএমবির তৎপরতার ধরন পরিবর্তনের তথ্য পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার শওকত আলী বলেন, ‘নব্য জেএমবির কাজের ধরনের অনেক পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তন এনেছে সদস্য রিক্রুট এলাকা, রিক্রুটের ধরনসহ নানা তৎপরতার। এসব তথ্য পাওয়ার পর কাজ শুরু করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।’ সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ‘নব্য জেএমবি’ আগে ফিজিক্যাল টার্চে গিয়ে সদস্য রিক্রুট করত। এখন দেখা যাচ্ছে প্রথমে অনলাইনে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করছে। এরপর মগজ ধোলাই, সামরিক ও বোমা তৈরির প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কর্মকা- অনলাইনে করা হচ্ছে। শুধু হামলা কিংবা গোপন কোনো মিশনের আগে পরিকল্পনা করতে ফিজিক্যাল টার্চ হচ্ছে।’ জানা যায়, চট্টগ্রামে গ্রেফতার হওয়া নব্য জেএমবির তিন সদস্য জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। নব্য জেএমবির নতুন কৌশল এবং কর্ম তৎপরতা নিয়েও দিয়েছেন নানা তথ্য। নব্য জেএমবির সদস্যরা উচ্চ শিক্ষিত এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রগতিশীল ঘরানা পরিবার ও রাজনীতিবীদ পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে মাঠে সদস্য রিক্রুটে নেমেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ এবং অল্প শিক্ষিত লোকজনকে টার্গেট করেও তৎপর রয়েছে তারা। সদস্য রিক্রুট এলাকা পরিবর্তন করেছে তারা। আগে যে সব এলাকায় তাদের তৎপরতা ছিল তা পরিবর্তন করে নতুন নতুন এলাকা টার্গেট করে মাঠে নেমেছে তারা। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের লোকজনকে টার্গেটের বিষয়ে সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসাগুলোতে প্রচুর গোয়েন্দা নজরদারি করা হয়। সে তুলনায় দোকান, কলকারখানা ও শ্রমজীবী মানুষের ওপর নজরদারি হয় না। এটাকে কাজে লাগাতেই নব্য জেএমবি শ্রমজীবী মানুষকে দলে ভেড়াতে টার্গেট করেছে। প্রসঙ্গত, ২৮ ফেব্রুয়ারি নগরীর ২ নম্বর গেটে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।

এ হামলায় পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন। ঘটনার পর পর আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করলেও তা অস্বীকার করেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ নব্য জেএমবির দিকে সন্দেহের তীর ছোড়ে তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মো. সাইফুল্লাহ, মো. এমরান এবং আবু সালেহ।

সর্বশেষ খবর