শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

যে কারণে নিউইয়র্কে করোনায় মৃত্যু বেশি

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্ক সিটিসহ সমগ্র স্টেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ স্টেটে ৬ মে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ৭৪ হাজার ৭৯৯ জন। এর মধ্যে কেবলমাত্র নিউইয়র্ক স্টেটেরই রয়েছেন ২৫ হাজার ৯৫৬ জন। অর্থাৎ মোট মৃত্যুর ৩২ ভাগই নিউইয়র্কের। কেন এমন ঘটছে-তা উদ্ঘাটন করতে গিয়ে স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো এক জরিপ থেকে অবগত হয়েছেন, হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় আসা রোগীর ৬৬ ভাগ বাসায় ছিলেন। তারা যথাযথ চিকিৎসা নেননি বা করোনাভাইরাসের নৃশংসতাকে আমলে নিতে চাননি। তদের বয়স ৫১ বছরের ঊর্ধ্বে এবং তারা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যাজমায় ভুগছিলেন।

গত বুধবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গভর্নর উল্লেখ করেন, রোগীদের ১৮ ভাগ আসেন নার্সিং হোম থেকে, কারাগার থেকে আসেন ১ ভাগেরও কম, গৃহহারারা আসেন ২ ভাগ, অন্য গ্রুপ থেকে আসেন আরও ২ ভাগ। তাদের ৬৬ ভাগ ছিলেন বাসায়। তিনি বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি এমনটা জেনে।’ নিউইয়র্ক স্টেটের ১১৩টি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ১৩০০ রোগীর অংশগ্রহণে ৩ দিনব্যাপী পরিচালিত এক জরিপে উদ্বেগজনক এ তথ্য উদ্ঘাটিত হয় বলেও গভর্নর জানান।

জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে ২০ হাজারের বেশি মানুষ হাসপাতালে আসছেন করোনাভাইরাস টেস্টিংয়ের জন্য। গত সপ্তাহেও ৫ হাজারের অধিক রোগী হাসপাতালে এসেছেন। ব্রিফিংয়ে তাদের সম্পর্কে স্টেট গভর্নর জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, প্রতি ৫ জন রোগীর ৪ জনই বেকার অথবা অবসর জীবনযাপন করছিলেন। মাত্র ১৭ ভাগ ছিলেন কর্মজীবী। গভর্নর বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম যে, নার্স, ডাক্তার, রেল-বাসের ড্রাইভার/শ্রমিকসহ দমকল বাহিনী অথবা পুলিশ বাহিনীর লোকই বেশি সংক্রমিত হয়েছেন এবং মৃতদের মধ্যেও তাদের সংখ্যাই অধিক হবে। কারণ, তারাই তো সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে আসছেন। কিন্তু সে ধারণা সঠিক ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের বেশির ভাগই বয়স্ক ছিলেন। প্রতি ৫ জনের ৩ জনেরই বয়স ৬০ বছরের অধিক। জরিপ অনুযায়ী, এই স্টেটের মোট রোগীর ৫৭ ভাগ ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির। মোট রোগীর ৪৫ ভাগ আফ্রিকান-আমেরিকান অথবা ল্যাটিনো। এসব রোগীর মাত্র ৩ ভাগ হাসপাতালে এসেছেন বাস অথবা সাবওয়েতে। ৯৬ ভাগ রোগীই আগে থেকে জটিল কিছু রোগে ভুগছিলেন। রোগীদের ৩৭ ভাগ ছিলেন অবসর জীবনযাপনকারী এবং ৪৬ ভাগ ছিলেন বেকার। এসব তথ্যে সহজেই অনুধাবন করা যায় যে, তারা কর্মরত ছিলেন না, সিটির বাইরেও যাননি, অধিকাংশই ম্যানহাটান, কুইন্স, ব্রুকলিন আর ব্রঙ্কস বরোতে বাস করছিলেন।

সর্বশেষ খবর