শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ঈদ বাজেটের অর্থ দান করা হবে শ্রেষ্ঠ ইবাদত

-আল্লামা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদ বাজেটের অর্থ দান করা হবে শ্রেষ্ঠ ইবাদত

বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। ঈদ উপভোগ করার জন্য সরকার শর্তসাপেক্ষে শপিং মল খুলে দিয়েছে। এর মাধ্যমে ঝুঁকির শঙ্কা নেই এ কথা বলা যায় না। এই বিপর্যয়ের সময় আমরা যদি ঈদ বাজেটের অর্থ কেনাকাটা না করে অভাবীদের মধ্যে দান করি, তাহলে দ্বিগুণ সওয়াব পাওয়া যাবে। আর এটা হবে শ্রেষ্ঠ ইবাদত। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। আল্লামা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ বলেন, করোনায় আমরা বিপর্যয়ে এটা কারও অজানা নয়। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। সবাইকে সতর্ক থাকার তৌফিক দান করুন। তিনি বলেন, সতর্কতার সঙ্গে শপিং মল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিছু শিল্পকারখানাও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সতর্কতার মাধ্যমেও আমাদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। তবুও আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। শর্তসাপেক্ষে মসজিদ উন্মুক্ত করাকে প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলে জানান তিনি।  ফরীদউদ্দীন মাসঊদ বলেন, সচরাচর আমরা ঈদ এলে বাজার করার জন্য উদগ্রীব হই। ঈদে বাজার করি। ঈদ উপভোগ করি কেনাকাটার মাধ্যমে। ইসলামে মূল শিক্ষা হলো অন্যের কষ্টকে নিজের কষ্ট মনে করা এবং নিজের আনন্দকে অন্যের সঙ্গে ভাগ করা। যারা দিন এনে দিন খান, তারা করোনাভাইরাসের কারণে চরম কষ্টে দিন পার করছেন। সত্যিকার অর্থে ঈদের আনন্দ হবে যদি আমরা কেনাকাটা কম করে সম্ভব হলে না করে ঈদ বাজেট গরিবের কল্যাণে ব্যয় করি। তাহলে আমাদের দ্বিগুণ সওয়াব হবে। এর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের ঈদের পরিপূর্ণ আনন্দ দান করবেন। ইসলামের এক উদাহরণ টেনে ফরীদউদ্দীন মাসঊদ বলেন, এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন টাকা জমাচ্ছিলেন হজ করার জন্য। যখন হজ করার মতো টাকা জমা হয়েছে, তখন তিনি দেখতে পেলেন তার আশপাশে অনেক অভাবী মানুষ না খেয়ে দিন পার করছেন। তখন ওই ব্যক্তি আর হজ না করে তার অর্থ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিলেন। ওই বছর হজের পর আল্লাহ ওই সময়ের এক নবীকে বললেন, এই বছর যারা হজ করেছেন তাদের কারও হজ কবুল হয়নি। যে অভাবী মানুষটি হজে না এসে, হজের অর্থ দিয়ে অন্য অভাবীদের দান করেছেন একমাত্র তার হজ কবুল হয়েছে। আর তার অসিলায় সবার হজ কবুল হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলাম আমাদের সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়। সুতরাং আমরা আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেনাকাটা না করে সেই অর্থ বিলিয়ে দিলে তা হবে শ্রেষ্ঠ ইবাদত। তিনি বলেন, ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে যদি কোনো মুসলমান কোনো ধরনের বিপদে পড়ে, তখন অপর মুসলমান ভাইয়ের কর্তব্য হলো- তাকে সাহায্য করা। কেননা, যে মানুষকে সাহায্য করে মহান আল্লাহতায়ালা তাকে সাহায্য করেন। ফরীদউদ্দীন মাসঊদ বলেন, হাদিসে অনেক বর্ণনা রয়েছে। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, আল্লাহতায়ালা কিয়ামতে তার দুঃখ-কষ্ট দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো সংকটাপন্ন ব্যক্তির সংকট নিরসন করবে, আল্লাহ তার দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় সংকট নিরসন করে দেবেন। তাই আমাদের সবার উচিত হবে রোজার পর ঈদে অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

সর্বশেষ খবর