শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

হাঁড়িভাঙ্গা বাজারজাত হবে সরকারিভাবে

নজরুল মৃধা, রংপুর

হাঁড়িভাঙ্গা বাজারজাত হবে সরকারিভাবে

কীটনাশক সংকট, শ্রমিক না থাকায় পরিচর্যার অভাব, কৃষি বিভাগের পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হওয়াসহ বেশকটি কারণে রংপুরের সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আমে চাষিদের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চাষিরা আম গাছের  দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছেন আর ভাবছেন এই আম যথাসময়ে পরিপক্ব হলেও তা বাজারজাত করবেন কীভাবে। করোনার ছোবলে চারদিকে সব কিছু স্থবিব। সেখানে এই আম পরিবহন হবে কীভাবে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে আম চাষিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারিভাবে এই আম বাজারজাত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সুস্বাদের কারণে হাঁড়িভাঙ্গা আম সারা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাওয়ার পরই এই আম বাজারে পাওয়া যায়। এ বছর ঝড় বাদলে কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিবছর  হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে রংপুরের চাষিরা ২০০ কোটি টাকার ওপর ঘরে  তোলেন। করোনা প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষিদের স্বপ্নে আঘাত হেনেছে। রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ হেক্টরে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ মেট্রিক টন। এবার শ্রমিক সংকটে অযত্ন-অবহেলায়, কীটনাশকের সংকটসহ নানা কারণে কৃষকরা আম খেত ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারেনি। ফলে এবার ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে এই আমের দাম কিছুটা কম থাকলেও প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙ্গা আম ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। মিঠাপুকুরের আম চাষি বকুল হোসেন, শ্যামপুরের সামছুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন আম চাষি জানান, প্রতিবছর কীটনাশক ব্যবসায়ীরা বাকিতে কীটনাশক দিয়ে যেত সেই সঙ্গে খেত পরিচর্যার বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিত। কিন্তু করোনার কারণে কীটনাশক বাকিতে পাওয়াতো দূরের কথা নগদ টাকা দিয়েও কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া করোনায় খেত পরিচর্যার জন্য এবার শ্রমিক পাওয়া যায়নি। ফলে খেত ঠিকমতো পরিচর্যা করা যায়নি। তারা আরও জানান, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই আম পরিপক্ব হলে তা বাজারজাত করা হবে কীভাবে। আম যদি বাজারজাত করা না যায় তাহলে গাছেই পচে যাবে আম। তবে কৃষি বিভাগ হাঁড়িভাঙ্গা আম বাজারজাত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন করোনার প্রভাবে অনেক কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে। দেশের বিখ্যাত এই আমের যাতে কৃষক ন্যায্য মূল্য পায় সে লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ আম বাজারজাতকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে আম চাষিদের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর