শনিবার, ৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

পাবলিক পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কী

আকতারুজ্জামান

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে গেছে এ পরীক্ষা। কবে নাগাদ এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সেটিও জানে না পরীক্ষার্থীরা। এখন এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ওপর। এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের কথা ছিল চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু এটিও পিছিয়ে গেছে।

জানা গেছে, এসএসসির ফল প্রকাশ পিছিয়ে যাবে কমপক্ষে এক মাস। ফল প্রকাশের পর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রস্তুতি নিতে হবে। ফল প্রকাশ না হওয়ায় একটি শঙ্কার মধ্যে রয়েছে এ শিক্ষার্থীরাও। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার্থীরা। আসন্ন পরীক্ষা নিয়ে সংকটে রয়েছে প্রাথমিকের শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি)-জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থীরাও। তথ্যমতে, এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর পরই সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষার একটি আয়োজন শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেও আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করে। এইচএসসি পরীক্ষা আটকে যাওয়ায় এ শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষার পাশাপাশি দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। দিনাজপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী শামসুন্নাহার কলি জানায়, পরীক্ষা পিছিয়ে গেল। কবে হবে এ পরীক্ষা সেটিও বুঝতে পারছি না। পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে প্রয়োজনীয় সময় পাব না। তাই এখন এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেব নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেব সেটি নিয়ে দ্বিধায় রয়েছি। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় আরও দীর্ঘ হলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর পর ফল প্রকাশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে করা হবে। ফল প্রকাশের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া কয়েক মাসজুড়ে চলে। আমরা এ সময় কমিয়ে আনার চেষ্টা করব। ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন থেকে যেন বড় সময় নষ্ট হয়ে না যায়, বড় ধরনের সেশনজটের সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। করোনাভাইরাসের কারণে এসএসসির ফল প্রকাশ করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সম্প্রতি এ ফল প্রকাশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেছেন, ঈদ উল ফিতরের পর পরই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছি আমরা। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার্থীরাও একটা সংকটে রয়েছে। তবুও সংসদ টেলিভিশন বাংলাদেশ ও অনলাইনের মাধ্যমে কিছু ক্লাস চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ পরিস্থিতিতে বাসাবাড়িতে পড়াশোনায় বেশি মনোযোগ দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর পরিস্থিতি বুঝে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রতি বছর নভেম্বরের শেষদিকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি)-ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে প্রভাব ফেলতে পারে খুদে এ পরীক্ষার্থীদের ওপরও। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ গতকাল বলেন, এখন নির্ধারিত ছুটি চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের ক্ষতি নিরূপণ করা হবে। কতটুকু সিলেবাসে সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সেটিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বলা যাবে।

সর্বশেষ খবর