রবিবার, ১০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ফেক ফেসবুক আইডি নিয়ে বিব্রত ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেক ফেসবুক আইডি নিয়ে বিব্রত ফখরুল

নিজের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিএনপির প্যাডে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমার নামে বানোয়াট বক্তব্য ও মতামত প্রকাশের  বিব্রতকর অবস্থা থেকে আমাকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে লক্ষ্য করছি যে, কুচক্রী মহল কর্তৃক আমার নামে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে বিভিন্ন বক্তব্য, মন্তব্য ও মতামত প্রকাশ করা হচ্ছে। আমি এর আগেও বলেছি এবং এখনো অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, আমার নামে আমি কোনো ফেসবুক একাউন্ট খুলিনি। এসব ভুয়া ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে এর কোনো মতামতের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং এর কোনো দায়-দায়িত্ব আমার নেই। সংশিশ্লষ্টদের অনুরোধ করব এসব ভুয়া একাউন্ট খুলে আমার নামে চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার : করোনা মহামারীর সময়ে সারা দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপক অপব্যবহার চলছে অভিযোগ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারকে জনরোষের আগুন থেকে রক্ষার জন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার চলছে। এ মুহূর্তে রাষ্ট্রের এই অন্যায় বন্ধ করতে হবে। এই গণবিরোধী আইন বাতিল করতে হবে। চলমান বৈশ্বিক করোনা মহামারীর সময়ে সারা দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন আইনের অপপ্রয়োগ করে গ্রেফতার, হয়রানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।

 এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হওয়া সব বন্দী, সব রাজবন্দী, লঘু অপরাধে ও রাজনৈতিক মামলায় সব বয়স্ক ও মহিলা বন্দী, দলের সিনিয়র নেতা আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুজ্জামান বাবর, ছাত্রনেতা ইসহাক সরকার, শেরপুর জেলা নেতা হযরত আলীসহ দীর্ঘদিন কারাবন্দী থাকা নেতাদের মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

একই সঙ্গে সব কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা এবং সংক্রমিতদের যথাযথ চিকিৎসার দাবিও জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন করে সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট, লেখক, ব্যবসায়ীসহ অন্যদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, দেশে একটি কার্যকরী মানহানি আইন থাকা সত্ত্বেও নির্যাতন ও হয়রানির উদ্দেশ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বারবার ব্যবহার করছে সরকার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সরকার কীভাবে সাংবাদিক ও সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে চলছে তার একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে পেছনে হাতমোড়া অবস্থায় হ্যান্ডকাফ পরা সাংবাদিকের (শফিকুল ইসলাম কাজল) ছবিসহ সংবাদ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার তো দূর থাকুক মানুষ তার কষ্টের কথাও যাতে ভার্চুয়াল জগতে প্রকাশ করতে না পারে সে জন্য একের পর এক পরিপত্র জারি করে চলেছে সরকার। বিটিআরসির মতো একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল জগতে সরকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রধান পুলিশি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদপত্র সম্পাদকদের সম্মিলিত সংগঠনও ওই গণবিরোধী আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে বারবার। ইতিমধ্যে ৭ জন রাষ্ট্রদূতও টুইটারের মাধ্যমে এই গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ করতে বলেছেন সরকারকে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের জারিকৃত পরিপত্রগুলো কী রকম ডিকটেটোরিয়াল চিন্তা করা যায় না। এখন চাল চুরি হচ্ছে, গম চুরি হচ্ছে, সয়াবিন তেল চুরি হচ্ছে, রিলিফ চুরি হচ্ছে এসব সম্পর্কে যদি লিখতে যান তাহলে কি সেটা অন্যায় হবে? সত্য উদঘাটন করাই তো সাংবাদিকদের কাজ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ধরনের আইন করে, এই ধরনের পরিপত্র জারি করে শুধু দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। এখন যে প্রশ্নটা এসে যায়, সরকার এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত নীরব  কেন? আর যারা এসব তুলে ধরছে, কথা বলছে, তাদের ওপর সরকার দমনপীড়ন চালাচ্ছে কেন? এই ক্ষেত্রে সরকারের নিশ্চয়ই  কোনো দুর্বলতা আছে, যে কারণে তারা প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।

সর্বশেষ খবর