বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

তিন কারণে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকরা

-অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ

তিন কারণে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকরা

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেছেন, তিন কারণে একের পর এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রথমত, তাদের যে নিরাপত্তা সামগ্রী (পিপিই) দেওয়া হচ্ছে সেগুলোর মান নিশ্চিত করা হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, অনেক রোগী করোনায় আক্রান্ত হলেও তথ্য গোপন করে সাধারণ রোগী হিসেবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তৃতীয়ত, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার ও কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে করোনা রোগীর  চিকিৎসা করতে হবে সে ব্যাপারে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মোবাইলে কথাগুলো বলেন তিনি।

ডা. আজিজ বলেন, এখনো অনেক চিকিৎসককে পিপিই ব্যবহারের নিয়ম জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিতে পারবেন না। দরকার ছিল চীন থেকে বিশেষজ্ঞ এনে সব চিকিৎসককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। এটা করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের। কিন্তু, সেটা হয়নি। অথচ, একজন চিকিৎসককে অনেক সময় ২৪ ঘণ্টা আইসিইউতে থাকতে হয়। কম করে হলেও ৮-১০ ঘণ্টা থাকতে হয়। এই সময়ে পিপিই পরিধান, সেটা খোলা, বদলানো, অনেক সময় টয়লেটে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা সামগ্রীগুলো খুলে রাখা, তার ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন, চশমা, কলম, প্রেসার মাপা মেশিন ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত রাখার কৌশল জানা প্রয়োজন। বাংলাদেশে এ ধরনের সমস্যা আগে হয়নি। তাই এসব নিয়মকানুন স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকরা জানেন না। সবার আগে দরকার ছিল তাদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া। অনলাইনে দেখানো হয়েছে কায়দা-কানুন, কিন্তু দরকার ছিল হাতে কলমে শিক্ষা। চিকিৎসকরা যদি এভাবে আক্রান্ত হতে থাকেন, দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। চিকিৎসা দেওয়ার মতো কেউ থাকবে না।

এ ছাড়া মাস্ক, গ্লাভস, গায়ের পোশাক, টুপি, সু-কাভার, চশমা- এগুলোর সমন্বয়ে পিপিই। যে সুরক্ষা সামগ্রীগুলো দেওয়া হচ্ছে তার মান যাচাই হচ্ছে কি? দরকার ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী পিপিই তৈরি করা। স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে সেগুলো তৈরি করা উচিত। এ ছাড়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও নিরাপত্তা সামগ্রী দিচ্ছেন। মান নিয়ন্ত্রণ কমিটি কি এসব পিপিইর মান পরীক্ষা করছে? নিরাপত্তা সরঞ্জাম মানসম্পন্ন হলে আর এগুলোর ব্যবহার জানলে এত চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার কথা নয়। পিপিই একদিনে একটিই ব্যবহার করা উচিত। দিল্লিতে প্রত্যেককে চারটি মাস্ক দেওয়া হয়েছে। তারা এগুলো পর্যায়ক্রমে পরেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে  দেখতে হবে। ভয়াবহ বিপদ কিন্তু আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে।

এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি পিপিই মজুদ করা দরকার। এখন ৫০-৬০ হাজার দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত বাড়লে দিনে এক লাখও লাগতে পারে।

সর্বশেষ খবর