বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সময় পেয়েও মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়নি

-অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান

সময় পেয়েও মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়নি

দেশে প্রতিদিন অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অপরিণত সিদ্ধান্তের বলি হচ্ছেন তারা। চিকিৎসকরা সব যদি সংক্রমিত হয়ে আইসোলেশনে চলে যান তাহলে চিকিৎসা দেবেন কারা? ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি আমরা। করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার অনেক সময় পেয়েও আমরা কাজে লাগাইনি। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিইনি। অথচ, এই যুদ্ধে সবার আগে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা  জরুরি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে কথাগুলো বলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেন, শুরুতে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভসের মতো নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে চিকিৎসকদের অনেক অভিযোগ ছিল। এগুলো ছাড়াই অনেকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এখন অবশ্য সেই সংকট কেটেছে। কিন্তু এসব নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরিধান ও পরিত্যাগ করারও বিশেষ নিয়ম আছে। এ জন্য প্রশিক্ষণ দরকার। সেটাই দেওয়া হয়নি চিকিৎসকদের। এ কারণে এগুলো পরার পরও আক্রান্ত হচ্ছেন। আসলে করোনার বিরুদ্ধে আমরা কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই যুদ্ধে নেমেছি। যাদের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা তারা গণমাধ্যমে বারবার বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়তে শতভাগ প্রস্তুতি আছে। যুদ্ধে নামার পর দেখা গেল সেই সেনাপতিদের কোনো প্রস্তুতিই নেই। ঢাল-তলোয়ার কিছু নেই।

মূলত স্বাস্থ্য বিভাগে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী বা নিয়ন্ত্রক তারা ধরেই নিয়েছিলেন এখানে করোনা তেমন কিছু করতে পারবে না। ডেঙ্গু যেভাবে মোকাবিলা করেছেন, ভেবেছিলেন এটাও সেভাবে মোকাবিলা করবেন। প্রথমে তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রতিটি হাসপাতালে কভিড ইউনিট করতে চেয়েছিল। কভিড সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা থাকলে এমন চিন্তা করতেন না। করোনা নিয়ে প্রথম সভাতেই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল, প্রতিটি হাসপাতালে কভিড ইউনিট করাটা হবে ভয়াবহ সিদ্ধান্ত। এ জন্য আলাদা হাসপাতাল নির্ধারণ করতে হবে। পৃথক কভিড হাসপাতালের সিদ্ধান্ত ঠিকই নিয়েছে, কিন্তু অনেক পরে। কভিড সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না থাকা, বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত না নেওয়া ও সময় পেয়েও প্রস্তুতি ছাড়া যুদ্ধের ময়দানে নামায় আজ এই বিপর্যয়। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এখন আমরা মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ। এখানে কৌশল বলে আমাদের কিছু নেই।

সর্বশেষ খবর