বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রাণ বাজি রেখে নিঃস্বার্থ সেবায় নার্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাণ বাজি রেখে নিঃস্বার্থ সেবায় নার্স

করোনা রোগীতে পূর্ণ হাসপাতালগুলোর করোনা ইউনিট। প্রাণঘাতী ভাইরাসের কারণে প্রতিদিনই প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। নিবিড় পরিচর্যায় সুস্থ হয়ে ফিরছেন তার চেয়েও বেশি মানুষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষটির কাছে যাচ্ছেন না স্বজনরাও। আর নিজের প্রাণ বাজি রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। মানবসেবায় অনন্য দায়িত্ব পালনকারী নার্সদের স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শনের দিন হিসেবে গতকাল পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস। নার্স দিবসে সব নার্স কর্মকর্তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৬৫ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও ১৯৭৪ সাল থেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইশমত আরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে গিয়ে সরকারি হাসপাতালের অন্তত ৩০০ নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।  বেসরকারি হাসপাতাল মিলে আক্রান্ত নার্সের সংখ্যা সাড়ে ৫০০ হবে। তবে নিম্নমানের মাস্কের কারণে এই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। শুরুর দিকে সেবা দিতে গিয়ে অনেক নার্স থাকা-খাওয়ার সমস্যায় পড়েন। সেই সমস্যা এখন আর নেই। তাদের দাবি- নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর মাঝে উন্নতমানের ফেস মাস্ক সরবরাহ করার। আক্রান্তের হার নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথ্য গোপন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে আধুনিক নার্সিং-এর প্রবর্তক মহীয়সী সেবিকা ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের সেবাকর্মের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁর জন্মদিন ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস হিসেবে পালিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো : ‘নার্স ইজ অ্যা ভয়েস টু লিড-নার্সিং ইজ দ্য ওয়ার্ল্ড টু হেলথ’।

গতকাল বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক, নার্স সবাই যার যার কাজে কর্মব্যস্ত। চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন, নার্সরা  রোগীকে স্যালাইন ও সেবা দিচ্ছেন। হাসপাতালে রোগীর চাপের মধ্যেও সবকিছু করছেন তারা। সব নার্স তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।  ভর্তি থাকা কয়েকজন রোগী জানালেন, ‘তারা কয়েকদিন যাবৎ হাসপাতালে আছেন এবং ডাক্তাররা সময়মতো এসে দেখে যান আর নার্স আপারা তো আছেনই। এ ছাড়া সকাল-বিকাল জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানো হয়।’ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের সিনিয়র স্টাফ নার্স শিল্পী রানী রায় গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে এখন পরিবারকে সময় দিতে পারছি না। বেশির ভাগ সময় পরিবারের সংস্পর্শের বাইরে থাকতে হচ্ছে নার্সদের। তিনি বলেন, অনেক সময় রোগীরা করোনার উপসর্গ গোপন করে অন্য রোগের চিকিৎসা নিতে আসছেন। এটি আমাদের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ইতিমধ্যে তথ্য গোপন করায় এর আগে ডাক্তার, নার্সরা সংক্রমিত হয়েছেন।

 

সর্বশেষ খবর