বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

কক্সবাজার ও যশোরে বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় চলন্ত গাড়িতে যুবতীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসাইন (৩০) পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চকরিয়া উপজেলার মরংঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাজ্জাদ পেকুয়া উপজেলা সদরের শেখের কিল্লা ঘোনা এলাকার আবুল হোসেন পুতুর ছেলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিএনজি অটোরিকশাযাত্রী চম্পাকে ৬ মে রাতে ধর্ষণের পর খুন করা হয়। তার মৃতদেহ চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনা এলাকার আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে চকরিয়া থানা পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পরদিন নিহত যুবতীর বাবা রুহুল আমিন তার আপন বোন, ভগ্নিপতি, ভাগ্নেসহ চারজনকে আসামি করে চকরিয়া থানায় মামলা করেন। এদিকে ঘটনাটি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে র‌্যাব। এ ঘটনায় জড়িত অটোরিকশাচালক জয়নাল আবেদীনকে (১৮) আটক করা হয়। জয়নাল পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা নন্দীরপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। জয়নালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী র‌্যাব জানতে পারে, সাজ্জাদ নামে অপর একজন এ ঘটনায় জড়িত। তারা দুজনই চম্পাকে পেকুয়া থেকে চকরিয়ায় আনার সময় আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্জন স্থানে নিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। এরপর সিএনজিতে তুলে চলন্ত অবস্থায় বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি গাড়ির সামনে ছুড়ে মারে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় চম্পা। র‌্যাব অভিযুক্ত সাজ্জাদকে ধরতে বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সর্বশেষ সোমবার সকালে র‌্যাবের একটি দল সাজ্জাদের চাচাতো ভাই প্রতিবন্ধী নেজাম উদ্দিন ও আবদুর রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। এর পর থেকে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী সাজ্জাদকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে একই দিন সকাল ১০টার দিকে শেখের কিল্লা ঘোনার একটি বাড়ি থেকে সাজ্জাদকে আটক করে পেকুয়া থানা পুলিশ। বন্দুকযুদ্ধের সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, সাজ্জাদকে আটক করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করে পেকুয়া থানা পুলিশ। একই দিন রাতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের সন্ধান দেবে বলে পুলিশকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় সাজ্জাদ। সেখানে পৌঁছামাত্র তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে হামলাকারীরা পিছু হটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাজ্জাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, ৬ মে সিএনজিযোগে চম্পা চট্টগ্রাম শহর থেকে নিজ বাড়ি খরুলিয়ায় ফিরছিলেন। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে চকরিয়া কোনাখালী এবিসি মহাসড়কে চলন্ত গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নিমর্মভাবে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে চম্পাকে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে তারা।

যশোরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক  ডজন মামলার আসামি নিহত : যশোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের সময় বাবু (৪০) নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত মধ্যরাতের দিকে সদর উপজেলার সাড়াপোল এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে পুলিশ। নিহত বাবুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে এক ডজন মামলা রয়েছে। যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, সোমবার মধ্যরাতের দিকে সদর উপজেলার সাড়াপোল কালাবাগ এলাকায় একদল সন্ত্রাসী অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালানোর উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও এ সময় পাল্টা ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে পুলিশ ঘটনাস্থল তল্লাশির সময় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ইন্সপেক্টর শেখ তাসমীম আলম জানান, স্থানীয়রা নিহত ব্যক্তির নাম বাবু বলে শনাক্ত করেছেন। তিনি বলেন, গোলাগুলির সময় পুলিশের দুজন কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তাদের পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ পিস ইয়াবা, ৫৪ বোতল ফেনসিডিল, একটি ওয়ান শুটারগান এবং কিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। ইন্সপেক্টর তাসমীম জানান, নিহত বাবুর বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকের মোট ১২টি মামলা রয়েছে। পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তাকে খুঁজছিল।

 

সর্বশেষ খবর