বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সংকটেও ব্রেক্সিটের পথে বেপরোয়া ব্রিটেন!

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

করোনা সংকটেও ঘড়ির কাঁটা থেমে নেই। চলতি বছরের শেষেই ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার কথা। তার আগে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে বোঝাপড়া না হলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। এরই মধ্যে দুই দফা আলোচনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। আগামী জুনের মধ্যে বোঝাপড়া না হলে ২০২১ সালে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট অনিবার্য হয়ে উঠবে। গত সোমবার থেকে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনায়ও অগ্রগতির আশা ক্ষীণ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সোমবার থেকে তৃতীয় দফার দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শুরু হয়েছে। শেষ হবে শুক্রবার। করোনার কারণে দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুখোমুখি হচ্ছেন। ইইউ পক্ষের প্রধান ব্রেক্সিট মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ এনে বলেন, ব্রিটেনের সরকার এই আলোচনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না।

উল্লেখ্য, জুনে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনাও ব্যর্থ হলে ব্রিটেনের সামনে দুটি পথ খোলা থাকবে। হয় ব্রেক্সিট-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার মেয়াদ আরও বাড়াতে হবে এবং সেই সময় কাজে লাগিয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির চেষ্টা চালাতে হবে। অথবা চুক্তি ছাড়াই ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে। চলতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট কার্যকর হলেও ব্রিটেনের মানুষ এখনো তার প্রভাব টের পাচ্ছে না। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায়ে ব্রিটেন এখনো ইইউর শুল্ক ইউনিয়নের অংশ রয়েছে। ইইউর বিধিনিয়ম মেনে ইইউ-বাজেটেও নিজস্ব চাঁদা দিয়ে চলেছে ব্রিটেন। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পণ্যের সরবরাহে কোনো বাধা সৃষ্টি হচ্ছে না। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস শনিবার এক মিডিয়া সাক্ষাৎকারে ‘হার্ড ব্রেক্সিট’-এর ঝুঁকি বেড়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তার মতে, ব্রেক্সিট চুক্তির সঙ্গে যে রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করা হয়েছিল, ব্রিটেন তা থেকে যেভাবে দূরে সরে যাচ্ছে তা দুশ্চিন্তার বিষয়। প্রসঙ্গত, বরিস জনসন সরকার যে কোনো মূল্যে চলতি বছরের শেষেই পুরোপুরি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। এমনকি জুনে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ব্যর্থ হলেও অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে না বলে সরকার জানিয়েছে। জুনের শেষ পর্যন্ত সরকারের হাতে সেই সুযোগ থাকবে।

সর্বশেষ খবর