বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২% সুদে ঋণ

-নাসরিন আউয়াল মিন্টু

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২% সুদে ঋণ

চলমান করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২ থেকে ৩ শতাংশ সুদে ঋণসুবিধা চান ওয়েব সভাপতি নাসরিন আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, সারা দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা বা এসএমই খাতে বিশেষ প্রণোদনার আওতায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ওই ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড ৯ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় অন্তত ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত বাজেট এসএমই খাতের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা খুবই জরুরি বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী নেতা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে গতকাল উইমেন এন্টারপ্রেনিয়র অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব) সভাপতি নাসরিন আউয়াল মিন্টু বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের পুনরায় স্বনির্ভর ও কর্মক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে, এর সঠিক বাস্তবায়ন ও বণ্টনে বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে। এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠান ও পণ্যসমূহ আন্তর্জাতিক মাননিয়ন্ত্রণ সংস্থা (আইএসও) সার্টিফিকেশন এবং গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডাইজেশনের আওতায় আনতে হবে। এটি এসএমই খাতের পণ্যসমূহ রপ্তানি করতে সহায়ক হবে। নাসরিন আউয়াল বলেন, এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের পণ্যসামগ্রী বাজারজাতকরণ ও ডাটাবেজ তৈরি করতে একটি ওয়েব পোর্টাল প্রণয়ন করা বিশেষভাবে জরুরি। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমারেখা আড়াই লাখের পরিবর্তে চার লাখ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র ও আয়ের সুযোগ তৈরি করতে অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। আসছে বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ কর্মসূচি ও অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন।

ওয়েব সভাপতি বলেন, ‘তরুণ বা স্টার্টআপ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি, প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর (ইপিজেড) এসএমই খাতের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কমপক্ষে ২০ শতাংশ জমি বরাদ্দ দিতে হবে। এসব অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা রাখতে বিশেষ কর্মসূচির দিকনির্দেশনা আগামী বাজেটে চাই।’

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংকটে বিপর্যস্ত কয়েক লাখ নারী উদ্যোক্তাকে বাঁচাতে কমপক্ষে এক বছরের জন্য ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করা এখন সময়ের দাবি। সারা দেশের নারী উদ্যোক্তারা সহায়তা না পেলে বিপর্যয় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। সরকার যে প্রণোদান ঘোষণা করেছে, তার প্রাপ্তি সব নারী উদ্যোক্তার জন্য নিশ্চিত করতে হবে। নারী উদ্যোক্তারা এখন সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। নারী উদ্যোক্তাদের এ নেতা বলেন, সারা বছর নারী উদ্যোক্তারা বসে থাকেন বৈশাখ ও দুটো ঈদের জন্য। এই ঈদ ঘিরে নারী উদ্যোক্তারা তাদের নিপুণ হাতে শৈল্পিকতার ছোঁয়ায় পণ্য তৈরি করেন। মাঝারি নারী উদ্যোক্তারা ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিয়ে পণ্য তৈরি করেন। শুধু পণ্য নয়, সেবা খাতেও অনেক নারী উদ্যোক্তা ব্যাপক পুঁজি বিনিয়োগ করে এখন বিপাকে আছেন। এবার বৈশাখ ও ঈদকে কেন্দ্র করে তৈরি নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য পড়ে থাকবে। আটকে যাবে তাদের পুঁজিও। ফলে নারী উদ্যোক্তারা পুঁজির অভাবে আগামীতে কিছুই করতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতি সরকার ও ব্যাংকগুলোকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে হবে। আর এসব সংকট উত্তরণে নতুন বাজেটে দিকনির্দেশনা থাকা উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর