বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই কেনাকাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই কেনাকাটা

রাজধানীর মার্কেট খুলে দিতেই শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটার ধুম। স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা না করেই ধাক্কাধাক্কি করে চলছে ঈদের কেনাকাটা। করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে কেনাকাটা।  অথচ বসুন্ধরা সিটিসহ দেশের বড় বড় শপিং মল বন্ধ রাখা হয়েছে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে। শুধু রাজধানী নয়, দেশের অন্যান্য জেলা শহরেও চলছে ঈদের কেনাকাটা। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। রাজধানীর ইসলামপুর নবাববাড়ি মার্কেটে দেখা যায়, দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ঢল। ধাক্কাধাক্কি করে কেনাকাটা করছে মানুষ। ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউ। অনেকের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। এসব ক্রেতার মধ্যে অধিকাংশই খুচরা ক্রেতা। কম দামে কেনাকাটার জন্য এই মার্কেটে এসেছেন। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা এই মার্কেটে ভিড় জমিয়েছেন। মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। ক্রেতাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত। করোনা সংক্রমণে খেতে পাচ্ছে না মানুষ। রাস্তায় সাহায্যপ্রার্থী মানুষের ভিড়। বিতরণের জন্য সরকারি ত্রাণ রাস্তা থেকে লুট করে নিচ্ছে ক্ষুধার্ত মানুষ। এ সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে অনেকেই মনোযোগ দিয়েছেন ঈদের পোশাক কেনায়। আড়ংয়ের আউটলেটগুলোতে মানুষকে লাইন দিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানছে না বেশির ভাগ দোকানি। ক্রেতারাও অসচেতন। বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে নেই করোনা সংক্রমণের ভয়। জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন ছাড়িয়ে এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা ঝুঁকি রাজধানীতে। অথচ মার্কেটগুলোতে জনসমাগম ঘটছে চোখে পড়ার মতো। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে করোনায় লাখো মানুষ মারা গেলেও দেশে চলছে ঈদ মৌসুম। দেশে করোনা আক্রান্ত ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৬৯ জন মানুষ। এসব নিয়ে কোনো ভ্রƒক্ষেপ নেই কারও। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের দোকানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসেন অনেকে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ইলিয়াস হোসেন দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে জুতা কিনতে এসেছিলেন। তার মুখে মাস্কও নেই। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ভিড় কম থাকায় মাস্ক খুলে রেখেছি। সামনে ঈদ তাই ছেলের জুতা কিনতে এসেছি। শিশুকে নিয়ে এ পরিস্থিতিতে বাজারে আসা ঝুঁকিপূর্ণ কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘জুতা তো ছেলেকে না এনে কেনা সম্ভব নয়। বাসায় ফিরে গোসল করে নেব।’ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। ফুটপাথের ওপরে দাগ দেওয়া হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে, কিন্তু পায়ে হাঁটা মানুষের মাঝে দূরত্ব বজায় রাখা কীভাবে সম্ভব তা জানে না কেউ। রাজধানীর বাইরে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতেও একই অবস্থা। রাজশাহীতে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে তাদের কোনো দোকানে ঢুকতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু মানুষের মধ্যে সচেতনতার লেশমাত্র নেই। মোড়ে মোড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচলে তৈরি হচ্ছে যানজট।

সর্বশেষ খবর