শিরোনাম
শনিবার, ১৬ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

নাটোরে পিয়াজের বাম্পার ফলন

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে পিয়াজের বাম্পার ফলন

নাটোরে এবার পিয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবাদি জমির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত জমিতে এবার পিয়াজের আবাদ হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ৫০ হাজার টনের অধিক পিয়াজ যাবে অন্যান্য এলাকায়। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় পিয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমিতে পিয়াজ আবাদ করা হয়। এর মধ্যে নলডাঙ্গা উপজেলায় সর্বাধিক ২ হাজার ৮৬০ হেক্টর, নাটোর সদরে ৪২০ হেক্টর, বাগাতিপাড়ায় ৩৪৫ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ২৩৫ হেক্টর, বড়াইগ্রাম ও লালপুরে ১৯৫ হেক্টর এবং সিংড়া উপজেলায় ৫৫ হেক্টর। জেলায় আবাদি জমির মধ্যে চারা পদ্ধতিতে আবাদি জমির পরিমাণ ৩ হাজার ৫৪০ হেক্টর, কন্দ ৭৬৫ হেক্টর এবং কদম অর্থাৎ বীজ পিয়াজের আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৭৩ হেক্টর।

সাধারণত জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটি পিয়াজ চাষে উপযোগী। গভীর চাষ দিয়ে জমির মাটি ঝুরঝুরে করে পিয়াজের বীজ থেকে উৎপাদিত চারা এবং কন্দ পিয়াজ অর্থাৎ ছোট পিয়াজ সরাসরি জমিতে রোপণ করা হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। জমিতে প্রয়োজন হয় পরিমাণমতো ইউরিয়া, ডিএপি, এমওপি ও গোবর সার। তবে এই এলাকার কৃষক জমিতে লবণ প্রযুক্তি প্রয়োগ করে পিয়াজের ফলন বৃদ্ধি করে থাকেন। কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাহেরপুর জাতের স্থানীয় সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় পিয়াজ চাষে কৃষকরা অভ্যস্ত। তবে কৃষি বিভাগ নতুন উদ্ভাবিত বারি-১ জাতের উচ্চ ফলনশীল পিয়াজের সম্প্রসারণে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী খামার স্থাপন করে এক বিঘা জমি চাষের প্রয়োজনীয় বীজ, সার ও সেচের অর্থ প্রদান করে। নাটোর সদর উপজেলায় স্থাপিত ১০টি প্রদর্শনী খামারের মধ্যে তেবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম বিঘায় ৮০ মণ পিয়াজ পেয়েছেন। একই উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের আগদিঘা এলাকার কৃষক সবুজ আলী তাহেরপুর জাতের পিয়াজ চাষ করে ৭০ মণ ফলন পেয়েছেন বলে জানান। নলডাঙ্গা উপজেলার রামসার-কাজীপুর এলাকার কৃষক জিয়াউর রহমান তিন বিঘা জমিতে তাহেরপুর ও বারি-১ জাতের পিয়াজ আবাদ করে উভয় ক্ষেত্রে প্রায় ৮০ মণ করে ফলন পেয়েছেন। এ পর্যন্ত ৫০ মণ পিয়াজ বিভিন্ন দরে বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি। সর্বোচ্চ এক হাজার ৮৫০ টাকা মণ দরেও পিয়াজ বিক্রি করেছেন জানিয়ে চলতি মৌসুমে লাভবান হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেন তিনি। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, বিগত সময়ে দেশে পিয়াজের ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে এবার কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত জমিতে পিয়াজ আবাদ করেন। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, কৃষি বিভাগের সহযোগিতা এবং কৃষকদের সদিচ্ছা ও চেষ্টার কারণে পিয়াজের বা¤পার ফলন হয়েছে, যা জেলার চাহিদা পূরণ করে অন্যান্য ঘাটতি এলাকার চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।

সর্বশেষ খবর