সোমবার, ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকায় ঢুকতে বের হতে কড়াকড়ি

পাটুরিয়া ফেরীঘাটে যাত্রীবাহী যান বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় ঢুকতে বের হতে কড়াকড়ি

ঢাকায় ঢুকতে-বেরোতে পুলিশের শক্ত অবস্থান -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঢাকায় আসা ও যাওয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি। গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে নজরদারি আরও কঠোর করা হয়েছে। ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে, ব্যাপক যাত্রীর উপস্থিতির কারণে গতকাল দুপুরের পর থেকে ফেরিতে যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে। ফেরি চলাচলও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেছে।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঢাকায় প্রবেশ বা ঢাকা থেকে বাইরে যেতে পারবে না। জরুরি সেবা ও পণ্য সরবরাহ কাজে নিয়োজিত যানবাহন এই নিয়ন্ত্রণের আওতামুক্ত থাকবে। যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনো ব্যক্তি যানবাহন চালালে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নিয়ন্ত্রিত চলাচলের ক্ষেত্রে নাগরিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে ডিএমপি। মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটের লঞ্চ, স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরিতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় পড়েছে। তবে গতকাল থেকে ঘরমুখো দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী চাপ অনেক বেড়েছে। ঘাটে নেই বাস বা মাইক্রোবাস। দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার যাত্রীরা যানবাহন না পেলেও মোটরসাইকেল যোগে অতিরিক্ত ভাড়ায় যেতে হচ্ছে। ঘাটে ফেরি ভিড়ার সঙ্গে শত শত যাত্রী গাদাগাদি করে নামছে। এদিকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় ঘাটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে ব্যাপক হারে। উভয় পাড়ে শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নদী পার হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা চরম বিপাকে পড়ছেন। ঝুঁকি নিয়েই অনেকে রওনা করছেন। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে উভয় ঘাট থেকেই যাত্রীরা পড়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ আর কয়েকগুণ টাকা খরচ করে ওপার থেকে ঢাকা পর্যন্ত ও এপার থেকে বরিশাল, খুলনা, ভোলা, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছাতে দেখা গেছে।

এদিকে ছোট যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়ায় ১৩টি ফেরি চালু রেখেছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে ঈদ ঘরমুখো যাত্রী পারাপার ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দিয়ে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলামুখী যাত্রীর চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। দুপুরের পর থেকে কঠোর অবস্থান নেয় প্রশাসন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. আবু আবদুল্লাহ রনি বলেন, দুপুরের পর থেকে নির্দেশনা আসে ফেরিতে যাত্রী পারাপার বন্ধ করার জন্য। সেই দিকে বিবেচনা করে পাটুরিয়া থেকে হয়তো যাত্রী পারাপারে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ কঠোর অবস্থানে আসার কারণে ফেরিতে যাত্রী পারাপার হ্রাস পেয়েছে। তবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকামুখী গাড়ির চাপ থাকায় তিনটি ফেরি বাড়ানোর কারণে বর্তমানে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। রাজবাড়ীর আহলাদীপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লুৎফর রহমান বলেন, দুপুরের পর ঢাকা থেকে যাত্রী আসা-যাওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোয়ালন্দ থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দিয়েছি। গোয়ালন্দ মোড়ে পুলিশের চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুবায়েত হায়াত শিপুল বলেন, শুনেছি, রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপারের কাছে যাত্রী পারাপার বন্ধ রাখার নির্দেশনা এসেছে।

 

সর্বশেষ খবর