মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

নিউইয়র্কে অবরুদ্ধ প্রবাসীদের জন্য সহায়তা

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে টানা প্রায় ৬০ দিনের অবরুদ্ধ জীবনে আটকে থাকা প্রবাসীদের সাহায্য-সহায়তা দিয়ে আসছে ডজন খানেক সংগঠন। এই প্রবাসীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী নিয়ে, বিশেষ করে বেকার অবস্থায় এক দুঃসহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তারা খাদ্য-সামগ্রী ক্রয়ের জন্য বাসার বাইরেও যেতে পারছেন না। এই বাস্তবতায় তাদের মধ্যে খাদ্য-সামগ্রী বিতরণ করছে এসব সংগঠনগুলো। প্রসঙ্গত, ২০ মার্চ থেকে লকডাউনে রয়েছে সারা আমেরিকার মতো নিউইয়র্ক সিটিও। এই সিটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দীর্ঘ মিছিলে কমপক্ষে ১৯৮ বাংলাদেশি রয়েছেন। এখনো শত শত প্রবাসী বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন। আবার অনেকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত সপ্তাহ থেকে করোনায় মৃত্যুর হার এবং হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তির সংখ্যা কমতে থাকায় অন্য কমিউনিটির মতো বাংলাদেশিদের মধ্যেও স্বস্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে কেউই স্বাভাবিক হতে পাচ্ছেন না। কারণ পরিচিত অনেকেই চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন, যাদের জানাজা অথবা শেষ কৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল না। এমন কঠিন এক দুঃসময়েই রোজা শুরু হয়। এ সময়ও আনুষ্ঠানিক ইফতার পার্টি তো দূরের কথা, তারাবি নামাজও হচ্ছে না মসজিদে। তার ওপর রয়েছে প্রায় প্রতিটি প্রবাসীরই অর্থ সংকট। কারণ সপ্তাহে কমপক্ষে ৬০০ ডলার করে বেকার ভাতার আবেদন করেও নিয়মিতভাবে তা পাচ্ছেন না ৮০ ভাগ আবেদনকারীই। যদিও বাসা ভাড়া ২০ আগস্টের মধ্যে না দিলেও মালিক তাগাদা দিতে পারবেন না- বলে স্টেট গভর্নর নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। তবে তাতে পেটের ক্ষুধা মিটানোর ছিল না। আর এমন ক্ষুধার কথা কেউ কাউকে বলতেও দ্বিধা করছেন। এমন বাস্তবতায় কয়েকশ প্রবাসীর (যাদের অধিকাংশই অবৈধ অভিবাসী) তালিকা করে রোজার আগে থেকেই প্রায় ডজনখানেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাঠে নামে।

এর অন্যতম হচ্ছে ফোবানা, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার, জেবিবিএ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, কভিড-১৯ কমিউনিটি ফুড ড্রাইভ, জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটি, পিপলএনটেক, মজুমদার ফাউন্ডেশন, নাভা প্রভৃতি। ফোবানার পক্ষ থেকে নিউজার্সি স্টেটে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৭ মে ফোবানার নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী এবং নির্বাহী সদস্য আবির আলমগীরের নেতৃত্বে অর্ধ শতাধিক দুস্থ পরিবারের বাসায় চাল-ডাল-তেল-আলু-লবণ-মসলা- সেমাই-চিনিসহ খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হয়। একইদিন জ্যাকসন হাইটসে খাবার বাড়ি আঙ্গিনা থেকে জেবিবিএ এবং নাভাসহ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে খাদ্য-সামগ্রীর প্যাকেট বিতরণ করা হয়। জেবিবিএর নেতা ফাহাদ সোলায়মান, নাভার নেত্রী রোকেয়া আকতারসহ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ সময় ছিলেন স্থানীয় স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রুজ। উল্লেখ্য, এই কর্মসূচিতে স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যানের অফিসও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। আড়াই শতাধিক প্রবাসীকে এসব প্যাকেট প্রদানের পাশাপাশি বেশ কজন মুক্তিযোদ্ধার বাসায়ও প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সদস্য শুভ রায়। এর আগে লাগাতার কয়েকদিন ধরে খাদ্য-সামগ্রীর শত শত প্যাকেট অসহায় প্রবাসীদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে সুধীজনের দৃষ্টি কেড়েছে ‘কভিড-১৯ কমিউনিটি ফুড ড্রাইভ’ নামক সংগঠন।

 

সর্বশেষ খবর