বুধবার, ২০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ঈদবাজারে এখনো ভিড়, নিয়ম মানছে না কেউই

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদবাজারে এখনো ভিড়, নিয়ম মানছে না কেউই

রাজধানীর ঈদ বাজারে এখনো বিপুল সংখ্যক ক্রেতা ঢুকছেন, বের হচ্ছেন। তাদের বেশির ভাগই স্বাস্থ্যবিধিকে পাত্তা দেন না। দোকানি বা ক্রেতাদের বড় অংশই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল আর বিপণিবিতানগুলোতে হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহারসহ দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করছেন না অনেকেই। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নির্দেশনায় এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় ঈদ কেনাকাটায় যেতে পারবেন না। এ নিষেধাজ্ঞা মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। প্রগতি সরণির সুবাস্তু শপিং মল এবং এর আশপাশের কয়েকটি শপিংমলে প্রবেশে সকাল  থেকেই দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি। গুলশান-১ নম্বরের ডিএনসিসি মার্কেটে উপেক্ষিত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা। অসচেতন ক্রেতারা ঝুঁকি নিয়েই কেনাকাটা করছেন। শাহজাদপুর এলাকাজুড়ে বিকালেই বসে অস্থায়ী দোকান। সেখানের চিত্র আরও করুণ। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই মুখোশ (মাস্ক) ব্যবহার করেন না। আবার কারও কাছে মাস্ক থাকলেও সেটা মুখে না দিয়ে খুলে রেখেছেন। পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লার মোড় মার্কেটগুলোতেও ব্যাপক ভিড়। দেশের বিভিন্ন স্থানে শপিং মল ও মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে ঈদের কেনাকাটা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এতে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুরান ঢাকার লালবাগ মোড় থেকে শুরু করে টিকাটুলী, ওয়ারী, নবাবপুর রোড, বংশাল, নাজিমউদ্দিন রোড, মৌলভীবাজার, চকবাজার, উর্দু রোড, ইসলামপুর, নিউমার্কেট এলাকা এবং এলিফ্যান্ট রোডের দোকানগুলোতেও ব্যাপক লোকসমাগম লক্ষ্য করা গেছে। টিকাটুলী এবং ওয়ারীতে পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিকসহ অন্যান্য পণ্যের সব দোকান খুলেছে। চকবাজারে প্লাস্টিক, খেলনা, গয়না ইত্যাদি মনোহারি পণ্যের দোকান খুলেছে। উর্দু রোডে অভ্যন্তরীণ বাজারমুখী পাইকারি পোশাকের দোকানে কেনাবেচা চলছে। ইসলামপুরে পাইকারি পোশাক ও বস্ত্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বেচাকেনা করছে। আর লালবাগ কেল্লার মোড় মানুষের ভিড়ে যেন তিল ধারণের জায়গা নেই। নিউ সুপার মার্কেটসহ এলিফ্যান্ট রোডের শপিং মল খোলা ছিল। এমনকি এসব মার্কেটের সামনের ফুটপাথেও ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে অনেক। বেচাবিক্রি চলছে বেশ। ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির মধ্যে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। সারি সারি দোকান আর মার্কেটের ভিতর গলিতে মাল রাখার কারণে হাঁটার সুযোগও নেই।

কেনাকাটার জন্য ওয়ারীতে সবচেয়ে ভালো জায়গা র‌্যাঙ্কিন স্ট্রিট। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, সুপরিচিত ব্র্যান্ডের সব শাখাই খোলা রয়েছে। স্থানীয় পোশাক, জুতা, প্রসাধন ও অন্যান্য পণ্যের দোকান খোলা। রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা ও রিকশা চলছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। তবে দোকানগুলোতে ক্রেতা ছিল স্বাভাবিক দিনের মতো। এ ছাড়া গতকাল রাজধানীর শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, মিরপুর রোডের ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, রামপুরা, বাড্ডার মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। গত ৪ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে দোকানপাট খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, হাটবাজার, ব্যবসা কেন্দ্র ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রতিটি মার্কেটে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। তবে সরকারের এ সিদ্ধান্তের পর জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনা করে সবার আগে শপিং মল না খোলার ঘোষণা দেয় বসুন্ধরা সিটি শপিং মল কর্তৃপক্ষ। সরকারের আদেশ জারির পর দিন ৫ মে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ‘বসুন্ধরা শপিং মল’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর সারা  দেশের বড় বড় শপিং মল ও মার্কেট না খোলার ঘোষণা আসে।

সর্বশেষ খবর