বুধবার, ২০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

শ্রমিক বিক্ষোভ অব্যাহত, ভাঙচুর

প্রতিদিন ডেস্ক

বেতন-বোনাসের দাবি ও ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক বিক্ষোভ চলছেই। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও আশুলিয়া থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

গাজীপুর : সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকার ইভেন্স গ্রুপের তিনটি পোশাক কারখানায় চলতি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গতকাল মহাসড়ক ও শাখাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকরা। দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

বিক্ষোভকারীরা জানান, ইভেন্স শিল্প গ্রুপের পক্ষে শ্রমিকদের চলতি মে’র আংশিক বেতন ও ঈদ বোনাস না দেওয়ার তথ্য জানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। দুই দিন যাবৎ সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ওই তথ্যটি ঘুরছে। গতকাল দুপুর ১টার পর উৎপাদন বন্ধ করে ওই গ্রুপের তিনটি কারখানার কমপক্ষে ৮ হাজার শ্রমিক বিক্ষোভ করে কারখানার বাইরে চলে যান। একপর্যায়ে তারা কারখানার পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।

দুপুর আড়াইটার দিকে বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে বিক্ষোভকারীরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে বিচ্ছিন্নভাবে জোটবদ্ধ হয়ে মহাসড়কেই অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গাজীপুর শিল্পপুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, মালিকপক্ষ ঈদের আগে যে কোনো সময় শতভাগ ঈদ-বোনাস দেওয়ার ঘোষণা দিলে সন্ধ্যার দিকে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যান। পরে ওই মহাসড়কে যান চলা স্বাভাবিক হয়। নারায়ণগঞ্জ : সদর উপজেলার ফতুল্লায় রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট কারখানা ফকির নিটওয়্যারে অসন্তোষের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সিভিল সার্জন ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। এতে দুটি গাড়ির চালকেরই মাথা ফেটে যায়। গতকাল বেলা ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফতুল্লার কায়েমপুরে ফকির নিটওয়্যারে কয়েকদিন ধরেই শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। শ্রমিকদের দাবি বোনাস প্রদান নিয়ে গার্মেন্ট কারখানা টালবাহনা করছে। দুই মাস ধরে লকডাউনে কাজ করার পরও তাদের হাফ বোনাস দিতে চায়। শ্রমিকরা এটা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ শ্রমিকরা তো হাফ কাজ করেননি। শ্রমিকরা পুরো সময় ধরেই কাজ করেছেন। মালিক পুরো বোনাস দিতে চাইলেও জিএম ও অ্যাডমিন মূলত টালবাহনা করছেন। এসব অভিযোগে সকাল ১০টা থেকেই গার্মেন্টের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এরই মধ্যে বেলা ১১টায় জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ এবং জেলা করোনাবিষয়ক ফোকাল-পারসন ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ফকির নিটওয়্যার কারখানা পরিদর্শনে যান। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাদের মালিকপক্ষের লোক ভেবে গাড়ি দুটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। কারখানার নির্মাণকাজে ব্যবহৃত লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। হামলায় সিভিল সার্জনের গাড়ির চালক সুরুজ্জামানের মাথা ফেটে যায় এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ির চালক জালাল মিয়া আহত হন। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল ইসলাম বলেন, মূলত বেতন ও বোনাসের দাবিতে ওই কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেখানে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হামলা ও ভাঙচুর চালান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সাভার : সাভারের আশুলিয়ার তিনটি পোশাক কারখানায় ৬৩৫ জন শ্রমিকের ছাঁটাই, বন্ধ কারখানা খোলাসহ বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে প্রতীকী অনশন করেপ্রণ শ্রমিকরা। গতকাল দুপুরের আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা।

 অনশনরত শ্রমিকরা জানান, কোনো আগাম নোটিস ছাড়াই হ্যাং টং বিডি লিমিটেড ৩৫০, আইডিএস গ্রুপ ফ্যাশন ফোরাম লিমিটেড ১৮৫ ও সিনহা নিট ডেনিম লিমিটেড ১০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকদের আইন অনুযায়ী কোনো পাওনা পরিশোধ করেনি।

সর্বশেষ খবর