বুধবার, ২০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সরকার বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘লকডাউন’ শিথিল করে সরকার দেশকে ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দোকান খুলে দেওয়া হলো, রেস্টুরেন্ট খুলে দেওয়া হলো। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সঙ্গে এগুলো সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত। এভাবে চলতে থাকলে করোনা মোকাবিলা দূরে থাক, সারা দেশ শিগগিরই ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। যার আলামত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল জানান, বাসায় থাকার কারণে বেগম খালেদা জিয়া মানসিকভাবে স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও করোনা জাতীয় পর্যবেক্ষণ সেলের আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, তাইফুল ইসলাম টিপু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দাম্ভিকতা ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের আর কিছুই নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে অদূরদর্শিতা, সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা ও একগুঁয়েমি মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। করোনায় মৃত্যুর দায় সরকারকে নিতে হবে।

বিএনপির এই মুখপাত্র সরকারি ছুটি প্রসঙ্গে বলেন, সাধারণ ছুটিতে সরকার আইনগতভাবে কাউকে বাধ্য করতে পারে না ঘরে থাকতে। সরকার কেন লকডাউন ঘোষণা করেনি, কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি, যার মাধ্যমে এটা বন্ধ করা যেতে পারে। কারণ আপনাদের যে অযোগ্যতা সেটাই এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। এ সময় তিনি করোনা পরীক্ষায় হাসপাতালের দীর্ঘ লাইনের কথা তুলে ধরেন এবং দেশের স্বাস্থ্য খাতের চরম অব্যবস্থাপনা ও সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন। ত্রাণ নিয়ে সরকারি দলের লুটপাটের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ যদি সেখানে অন্যান্য রাজনৈতিক দল-পেশাজীবী সংগঠন সম্পৃক্ত থাকত তাহলে এ চুরিটা হতো না। সরকার যতটুকু ত্রাণ দিয়েছে তার সবটাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ বা অন্য দলের লোকদের কাউকেই কোনো ত্রাণ দেওয়া হয়নি। বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, চাল-ডাল ও তেল চুরির পর এবার নগদ টাকা হরিলুটের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সরকার। গণমাধ্যমে দেখলাম, ৫০ লাখ কর্মহীন লোকের মধ্যে ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা বিতরণ করছে সরকার। মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে, ব্যাংকের মাধ্যমে সে টাকা বিতরণ করেছে। এ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে প্রদানের দাবি জানান মির্জা ফখরুল। এ সময় তিনি ত্রাণ চুরি ও ভুয়া তালিকা প্রণয়ন সম্পর্কে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সিপিডির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। সারা দেশে বিএনপির ত্রাণ কাযর্ক্রম তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দলের ত্রাণকাজ পরিচালিত হচ্ছে। ১৭ মে পর্যন্ত সারা দেশে ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৩টি পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো। এতে ১ কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার ৭৭২ জনের কাছে এ সুবিধা পৌঁছাচ্ছে। এ ছাড়া ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে প্রায় ৭৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ২ হাজার পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহ করেছে এবং অনলাইনে ড্যাব সদস্যরা দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা প্রদান করছেন। সিলেট কারাগারে একজন বন্দীর করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুবরণ ও বিভিন্ন কারাগারে আক্রান্তদের চিকিৎসা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে অবিলম্বে রাজনৈতিক কারণে বন্দীদের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

সর্বশেষ খবর