বুধবার, ২০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

বাউলের ঘরে আগুন, ধরা পড়েনি দুর্বৃত্তরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের অন্যতম শিষ্য বাউল রণেশ ঠাকুরের আসর ঘর গত রবিবার গভীর রাতে কে বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থল উজালধল গ্রাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দিরাই পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গানের আসরের ঘরটি পুড়ে যাওয়ায় বাউলের ব্যবহার্য বাদ্যযন্ত্র ঢোল, বেহালা, দোতারা, একতারা, খঞ্জনি, মন্দিরা, হারমোনিয়ামসহ বেশ কিছু দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ও ঘরে সংরক্ষিত মূল্যবান কাঠ ছাই হয়ে যায়। বাউল রণেশ ঠাকুর বলেন, অন্যান্য দিনের মতো রবিবার রাতে খাবার খেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত গভীর হলে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে ঘরের সবার ঘুম ভেঙে যায়। পরে প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। রণেশ ঠাকুরের স্ত্রী প্রণতি চক্রবর্তী বলেন, দূরের ভক্তদের বাড়িতে রেখে বাউল গান শেখানোর জন্য আজ থেকে ১০ বছর আগে তারা এ ঘরটি তোলেন। গান শেখানোর জন্য সেখানে ছিল বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। এ ছাড়া বাউল গানের পুরনো বইখাতাও ছিল।

বাউল আপেল মাহমুদ বলেন, যে-ই করে থাকুক কাজটি খুবই জঘন্য। আগুন দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের তিনি আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের বাড়ির লাগোয়া রণেশ ঠাকুরের বাড়িতে করোনাকালের পূর্ব পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই বাউল আসর বসত। রণেশ ঠাকুরের বসতঘরের উল্টোদিকে তার বাউল আসর ঘর। ওখানেই তার নিজের ও শিষ্যগণের যন্ত্রপাতি থাকত।

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, রাত প্রায় দেড়টায় চিৎকার শুনে তিনি এগিয়ে গিয়ে দেখেন রণেশ ঠাকুরের আসর ঘরে দাউ দাউ আগুন জ্বলছে। রণেশ ঠাকুর কান্নাকাটি করছেন। পরে সবার চেষ্টায় আগুন নেভালেও রণেশ ঠাকুরের প্রায় চল্লিশ বছরের সাধনার সব যন্ত্রপাতি, গানের বইপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, আগুন লাগানোর ঘটনাটি খুবই গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে শিগগিরই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সফিউল্লাহ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর