শুক্রবার, ২২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে বেক্সিমকোর রেমডেসিভির

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসায় নিজেদের উৎপাদিত রেমডেসিভির ওষুধ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সরকারি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় এ ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। এ জন্য সরকারের কাছ থেকে কোনো টাকা নেবে না বেক্সিমকো। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজেদের উৎপাদিত এক হাজার রেমডেসিভির ইনজেকশন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে তুলে দেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন। উল্লেখ্য, বেক্সিমকো উৎপাদিত ইনজেকশনটির নাম বেমসিভির। এ সময় নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘রেমডেসিভিরকে জরুরি ব্যবহারের জন্য আমেরিকায় অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ওষুধের চেয়ে এই ওষুধের দাম কিছুটা বেশি। একজন রোগীর ৬ থেকে ১১টি ইনজেকশন প্রয়োজন হয়। একটি ইনজেকশনের দাম যদি সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা হয়, তাহলে প্রায় ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে একজন রোগীর। যেহেতু বাংলাদেশ সরকার সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছে তাই বেক্সিমকো থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালে যত রোগী আছে, তাদের যদি রেমডেসিভির প্রয়োজন হয়, তাহলে বিনামূল্যে দেওয়া হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রেমডেসিভিরের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ। একই ধারায় বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরও এ ওষুধের জরুরি ব্যবহারে (ইমারজেন্সি ইউজ) অনুমতি দিয়েছে। বেক্সিমকো প্রথম কোম্পানি, যারা ওষুধটি এ অঞ্চলে উৎপাদন করেছে। যেসব রোগীর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল, মুমূর্ষু, তাদের এ ওষুধ দেওয়া হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা রোগীদের এ ওষুধ দেবেন। আশা করি এতে উপকার হবে, জীবন রক্ষা হবে।’ তিনি বলেন, ‘কভিড রোগীদের জন্য এখনো কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। এখনো এমন কোনো ওষুধও আসেনি, যা খেলেই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে। তবে বেশ কিছু ওষুধ বাজারে এসেছে। এ ওষুধগুলোর সবই কিছু কিছু কাজ করে, রেমডেসিভির তেমনই একটি ওষুধ। আমাদের চিকিৎসকরা ট্রিটমেন্ট প্রটোকলে কিছু ওষুধ যুক্ত করেছেন। আমরা আশা করি এ ওষুধটিও প্রটোকলে যুক্ত হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘তবে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, টেস্ট করা ও আইসোলেশনে থাকাই এখন সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আমরা চাই না কারও করোনায় মৃত্যু হোক। এর পরও এ পর্যন্ত অনেক মৃত্যু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘৭০ দিন পার করেছি। আমি মনে করি আমরা পিকে আসতেছি। যত দিন এটা না কমবে, আমরা বলতে পারব না পিকে পৌঁছে গেছি। যেদিন ডাউনওয়ার্ক হবে, সেদিন থেকে আমরা বলতে পারব পিকে পৌঁছে এখন নামছি। এর পরও আমি মনে করি যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। ফেরি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু মানুষ মোটরসাইকেল, রিকশায় করে জেলায় জেলায় যাচ্ছে। আমি লক্ষ্য করেছি মায়েরা ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মার্কেটে যাচ্ছেন। আমি আহ্বান করব, আপনারা ছোট বাচ্চাদের নিয়ে দোকানে ভিড় করবেন না। নিজে আক্রান্ত হবেন, বাচ্চারা আক্রান্ত হবে। তখন ঈদ আর আনন্দের থাকবে না, নিরানন্দের হবে।’

সর্বশেষ খবর