শুক্রবার, ২৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

স্পিরিট পান কওে ২১ জনের মৃত্যু

প্রতিদিন ডেস্ক

ঈদের ছুটির সময় স্পিরিট পান করে রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়ায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের, দিনাজপুরে ৯ জনের এবং বগুড়ায় ২ জনের।

রংপুর থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, রংপুরে ঈদের আনন্দ করতে গিয়ে স্পিরিট পান করে ১০ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন পীরগঞ্জের ৭ জন এবং বদরগঞ্জের শ্যামপুরের ৩ জন। এ ছাড়া আরও ১৫ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৩ জন দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্ব বরণ করেছেন। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকালে খোলাহাটি গ্রামের জেলফেরত আবদুর রাজ্জাক (৪৫), বিকালে পাহাড়পুরের জাইদুল হক (৩৫) ও মিঠাপুকুরের বাজিতপুরের চন্দন কুমার (৩০), আগের দিন সকালে বড় পাহাড়পুরের সেলিম মিয়া (৫০) ও রাতে রায়তি সাদুল্লাপুরের দুলা মিয়া (৫২) এবং হরিরাম সাহাপুরের সেরাজুল মিস্ত্রি (৩৫), ঈদের আগের দিন মেস্টা গ্রামের নওশা (৫৫) মারা যান। এ ছাড়াও ওই উপজেলার ধল্লাকান্দির খালেক (৫০), আকবর (৪৫) ও মিলন মাস্টার (৫২), কাজীর পাড়ার খোড়া শাহিন (৪২) ও খোলাহাটির ডিস মতিসহ (৩৬) ১০/১২ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাড়িতে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তদের মধ্যে ৩/৪ জন দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এ ছাড়া বদরগঞ্জে রেকটিফায়েড স্পিরিট পান করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নুর ইসলাম (৩০) এবং রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়নের সরোয়ার হোসেন (৩১) ও মোস্তফা কামাল (৩০)। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে সরোয়ার ও মোস্তফা কামাল এবং বুধবার সকালে নুর ইসলাম মারা যান। তিনজনই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও কয়েকজন অসুস্থ অবস্থায় গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।  পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেস চন্দ্র বলেন, এ বিষয়ে  অনুসন্ধান করা হচ্ছে। মাদকের উৎস খোঁজা হচ্ছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, ঈদের রাতে বন্ধুদের নিয়ে দিনাজপুরে বিরামপুরে নেশাজাতীয় বিষাক্ত রেকটিফায়েড স্পিরিট পান করে নারীসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জন হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে কয়েকজন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ওই এলাকার ‘পল্লী হোমিও হল’-এর স্বত্বাধিকারী ডা. আবদুল মান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। এর আগে বুধবার দুপুর পর্যন্ত স্বামী স্ত্রীসহ ৬ জন মারা যান। রাতে দিনাজপুর এম আবদুুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জন এবং ওই রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান।

মৃতরা হলেন- বিরামপুরের মাহমুদপুর এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে সোহেল রানা (৩০) এবং আবুল হোসেনের ছেলে মনোয়ার হোসেন (৪২) এবং আবদুুল খালেকের ছেলে আবদুুল আলিম (৪০), বিরামপুর পৌর শহরের মাহমুদপুর এলাকার আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে আবদুল মতিন (২৭), তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে আজিজুল ইসলাম (৩৩), একই এলাকার সুলতান মাহমুদের ছেলে মহসিন আলী (৩৮), হঠাৎপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা (৩৫) এবং শহরের ইসলামপাড়া এলাকায় তাপস কুমারের ছেলে অমৃত রায় (২৫)। এ ছাড়াও চিকিৎসাধীন রয়েছেন জালাল উদ্দিনের ছেলে আবদুস সাত্তার (৩৭), শহিদুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (২১), গোলাম মোস্তফার ছেলে জার্জেস শাহ (৩৮), আবদুুল খালেকের ছেলে শাহিন (৩২)। বগুড়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বগুড়ার ধুনটে রেকটিফায়েড স্পিরিট পানে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট বাজারে তারা স্পিরিট পান করেন। মৃতরা হলেন- ধুনটের ঈশ্বরঘাট গ্রামের আবদুর রশিদের পুত্র আল আমিন ওরফে কসাই (২৮), একই গ্রামের হাফিজুর রহমানের পুত্র গাড়িচালক আবদুুল আলিম (৩০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে তারা দুজন ঈশ্বরঘাট বাজারে একসঙ্গে রেকটিফায়েড স্পিরিট (আরএস) পান করেন। তারা বাসায় ফিরলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে আল আমিন রাতে অসুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান। তিনি পেশায় ছিলেন মাংস বিক্রেতা। তার অপর সঙ্গী আবদুুল আলিম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে ধুনট হাসপাতাল নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাতে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৪টায় তিনি মারা যান। তিনি ঢাকায় গাড়ি চালাতেন।

সর্বশেষ খবর