বুধবার, ৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পে নজর সরকারের

শ্রমিকের বেতন, কারখানা ভাড়া, ইউটিলিটি বিল পরিশোধে পুনর্অর্থায়ন স্কিমের সুপারিশ

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

করোনা-সংকটে বিপর্যস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করতে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ খাতকে উজ্জীবিত করতে সচল রপ্তানিমুখী শিল্পের মতো শুধু এসএমই খাতসংশ্লিষ্ট শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের বেতন নির্বাহ, উদ্যোক্তাদের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বা চলতি মূলধন প্রদান, কারখানার ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল পরিশোধে একটি পুনর্অর্থায়ন স্কিম গঠনের সুপারিশ করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, এ পুনর্অর্থায়ন স্কিম থেকে উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান এবং এক বছরের মধ্যে সেই ঋণ কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ সুপারিশমালা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনাভাইরাসের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্পে ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিতে এসএমই খাতের কথা বিবেচনায় নিয়ে এরই মধ্যে এ খাতের জন্য পৃথকভাবে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া করোনা-পরবর্তী অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সারা দেশের অতিক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পাশাপাশি বিসিকের আওতায় যেসব শিল্প রয়েছে সেগুলোকে উজ্জীবিত করার জন্যও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নানা ধরনের সুপারিশ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানোর কথা জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এসএমই খাতের ৭৮ লাখ শিল্পপ্রতিষ্ঠান দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্পোন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে উৎসাহিত করা হচ্ছে এ খাত। বর্তমান মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে এসএমই খাতের দীর্ঘসময় দেশে লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকায় দেশের এ খাতেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তাই সম্ভাবনাময় এ খাতটিকে চাঙ্গা করতে বিশেষ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করছে শিল্প মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বেশিরভাগই বন্ধ থাকায় এ শিল্পে জড়িত শিল্পমালিক, উদ্যোক্তা, শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকের পাশাপাশি এসব শিল্পের সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ও অত্যন্ত শ্রমনির্ভর অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির এবং মাঝারি শিল্পের জন্য প্রণীত সুপারিশ বিবেচনার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ওই সুপারিশে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও কুটির এবং মাঝারি শিল্প কর্তৃক গৃহীত ঋণের কিস্তি এক বছরের জন্য স্থগিত এবং আর্থিকভাবে ভালো অবস্থানে থাকা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঋণ রি-শিডিউলের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন উদ্যোক্তাদের ঋণের আওতায় আনার লক্ষ্যে বিকল্প ঋণ উৎস যেমন : ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনী ঋণ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে বলা হয়েছে, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মগুলোকে সরকার সহজ শর্তে তহবিল দিলে তারা উদ্যোক্তাদের সহজশর্তে ঋণ দিতে পারবে।

 

সর্বশেষ খবর