বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

তিতুমীর কলেজ কর্মচারী ও করোনা ক্যাম্প কর্মী সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বে করোনার মহামারী, দেশেও আতঙ্ক। আক্রান্ত অর্ধলক্ষেরও বেশি মানুষ। আর তাই সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে বেশ কিছু সংস্থাও। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার। তারা দুই মাস ধরে ক্যাম্প চালিয়ে আসছিল রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে। কিন্তু মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও হেলথ কেয়ারের স্বাস্থ্যকর্মীরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর রাস্তায় এসে স্লোগান দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা দাবি করেন জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ারের স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ ঘটনায় তিতুমীর কলেজ প্রশাসন এবং জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার সাধারণ ডায়েরি করার কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

তবে অভিযোগে তিতুমীর কলেজের কর্মচারীরা জানান, তাদের ওপর তিনবার হামলা চালানো হয়েছে। রাত ১০টায়, ১২টায় ও রাত ২টায়।

ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে জানতে চাইলে তারা জানান, রবিবার ছেলেদের থাকার জায়গায় একজন মেয়েকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। ভিতরে প্রবেশ করতেই করোনা বুথের দুজন ছেলে ও একজন মেয়েকে অসৌজন্যমূলকভাবে থাকতে দেখে তিতুমীর কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা প্রতিবাদ করেন। এরপর হেলথ কেয়ারের কর্মীরা তাদের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। সর্বশেষ সোমবার রাত ১০টার দিকে তাদের দুজন কর্মীকে হেলথ কেয়ারের কর্মীরা কলেজ গেটে মারধর করেন। একপর্যায়ে জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ারের স্বাস্থ্যকর্মীরা চড়াও হন। তারা তিতুমীর কলেজের কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের বাইরে বের করে দেন।

এদিকে এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন দুই সংবাদকর্মীও। তারা জানান, প্রথমে তারা তিতুমীর কলেজ কর্মচারীদের কাছে বিস্তারিত জেনে অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ারের স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। এ সময় তারা বরকত মিলনায়তনে থাকেন শুনে সংবাদকর্মীরা ডাকাডাকি করতে থাকেন। কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে তারা ভিতরে ঢোকেন। এ সময় হঠাৎই ৫০ জনের মতো লোক এসে তাদের ধাক্কা এবং কিল-ঘুষি দিতে থাকেন। নিজেদের সংবাদকর্মী পরিচয় দিলেও তারা তাদের লাঞ্ছিত করেন।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘যতটুকু শুনেছি আমাদের স্টাফদের অনেক পেটানো হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা করণীয় ঠিক করব।’

তিতুমীর কলেজের কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ, তিতুমীর কলেজ নাট্যদল, শুদ্ধস্বরসহ বিভিন্ন সংগঠন।

এদিকে জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ারের স্বেচ্ছাসেবীরা অভিযোগ করে বলেন, কলেজের কর্মচারীরা অনেক দিন ধরে তাদের সঙ্গে অসহযোগিতামূলক আচরণ করছেন। তাদের মনোভাব এমন, যেন এই কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে করোনা টেস্টের জন্য স্থাপিত বুথগুলো উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, কলেজের কর্মচারীদের হামলায় তাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ারের আহ্বায়ক সাবরিনা আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘তিতুমীর কলেজে আমরা একটা ক্যাম্প চালিয়ে আসছি দুই মাস ধরে। কভিড-১৯ রোগীদের যারা স্যাম্পল সংগ্রহ করেন, আমরা তাদের ট্রেনিং দিয়ে থাকি। এখানে আমাদের প্রায় ১৭৫ জনের মতো স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করেন। এখানকার তিতুমীরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, তারা সব সময়ই একটু ঝামেলা করতেন।’ জানতে চাইলে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো পক্ষের অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর