শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা সন্দেহে লাশ নেয়নি পরিবার হিমঘরে ৪৩ দিন

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ নগরীর এস কে (সূর্য কান্ত) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ এপ্রিল মারা যায় আরাফাত হোসেন (১৭) নামের এক কিশোর। কিন্তু করোনা সন্দেহের কারণে লাশ নেয়নি পরিবার। যদিও মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় আরাফাতের শরীরে কভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এরপরও ৪৩ দিন ধরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে পড়েছিল ওই কিশোরের লাশ। আরাফাত ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চরপাড়া এলাকার চড়ুইতলা গ্রামের মজনু মিয়ার সন্তান। মৃত্যুর ৪২ দিন পর বুধবার আরাফাতের বাবা কোতোয়ালি থানায় লিখিতভাবে লাশ গ্রহণের অনিচ্ছা জানান। পরিবার ও এলাকাবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন মজনু মিয়া।

ময়মনসিংহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল-আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আরাফাতের বাবা সন্তানের লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি আবেদন করেন। তবে আমরা আবারও মজনু মিয়াকে লাশ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি।’

এদিকে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম জানান, আরাফাতের বাবাকে অনেকেই ভুল বুঝিয়েছেন। লাশ না আনার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা চাপ প্রয়োগ করেছেন। এ ছাড়া তিনি আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তবে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি মানসিক সাহস দেওয়ায় তিনি লাশ দাফনে রাজি হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুরে লাশ দাফন করা হবে।

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম মশিউল আলম জানান, এপ্রিলের ২০ তারিখ করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে আরাফাত নগরীর এস কে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর দুদিন পরই সে মারা যায়। মৃত্যুর পর তার শরীর থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে ফল নেগেটিভ আসে। এর পরও আরাফাতের মরদেহ তার পরিবার গ্রহণ না করায় তা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।

সর্বশেষ খবর