শনিবার, ৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা উপসর্গ নিয়ে ১৭ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন জেলায় সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে চাঁদপুরে পাঁচজন, ফেনীতে দুজন, বরিশালে একজন, নেত্রকোনায় একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুজন, কিশোরগঞ্জে একজন, পটুয়াখালীতে তিনজন, হবিগঞ্জে একজন ও সিলেটে একজন মারা গেছেন। এর মধ্যে অনেকের করোনা পরীক্ষা করা হলেও ফলাফল পাওয়ার আগেই তারা মারা যান। মৃত্যু ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টদের বাড়িঘরও লকডাউন করেছে                 প্রশাসন। করোনা সন্দেহে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করাও হচ্ছে। অনেকই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী- চাঁদপুরে কভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তারা মারা যান বলে জেলার সিভিল সার্জন মো. শাখাওয়াত উল্লাহ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পাঁচজনের তিনজন হাজীগঞ্জ উপজেলার। তা ছাড়া সদর উপজেলা ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় রয়েছেন একজন করে। সিভিল সার্জন বলেন, এই পাঁচজনের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে একজন হলেন হাজীগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আবদুল আউয়াল সর্দার। তিনি শুক্রবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে মারা যান। এ ছাড়া একজন কলেজছাত্রীও মারা গেছেন। ফেনীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন দুজন। বৃহস্পতিবার রাতে তারা মারা যান বলে ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানিয়েছেন। জানা গেছে, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দুজনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই তারা মারা যান। তাদের বয়স ৫৫ ও ৬৫ বছর। তাদের একজন দাগনভূঁঞার জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা আর অপরজন সোনাগাজীর মতিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা। বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন মারা গেছেন। ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে। তার বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা এলাকায়। ওই রোগী জ¦র, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ৪ জুন করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি-না তা জানার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। নেত্রকোনার মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার লক্ষণ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ছন্দু মিয়া (৬০) এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাংবাদিকসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। সকালে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে করোনাভাইরাসের উপসর্গ (জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট) নিয়ে আবু বক্কর (৫০) নামে সাংবাদিকের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ফটো সাংবাদিক হিসেবে ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় ওই গ্রামের চারটি পরিবারকে লকডাউন করা হয়েছে। এ ছাড়া সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়ায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে লতিফ (৬০) নামক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গত রবিরার থেকে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার দুপুরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় জ্বর-ঠান্ডা নিয়ে এক বৃদ্ধ (৭০) মারা গেছেন। গতকাল সকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এর আগে গত বুধবার তার নমুনা নেওয়া হয়। নমুনা পরীক্ষার ফল এখনো আসেনি। এ নিয়ে উপজেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। করোনা ভাইরাসের উপসর্গ (জ্বর, শ্বাসকষ্ট) নিয়ে পটুয়াখালীতে তিনজন মারা গেছেন। শুক্রবার সকালে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও বৃহস্পতিবার মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে তারা মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিরা হলেন, শহরের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হাফেজ মো. মতিউর রহমান (৭০), নিজাম উদ্দিন (৫০) ও মো. মজিবর আকন (৪৮)। জানা গেছে, সকালে নিজাম উদ্দিন নামে একজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার জ্বর- শ্বসকষ্ট নিয়ে মো. মতিউর রহমান হাসপাতালে ভর্তি হলে রাতে তিনি মারা যান। নিজাম পটুয়াখালীর কোড়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা। মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কিছমতপুর গ্রামের মজিবর আকন জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হলে রাতে মারা গেছেন বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মতিন বলেন,  করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি দুজন মারা গেছেন। সিলেটে ইকবাল হোসেন (৫৫) বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত এই ব্যক্তির। শুক্রবার ভোরের এ ঘটনা সিলেট নগরের। হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে (৪৮) মৃত ঘোষণা করেন। মৃত ব্যক্তি ঢাকার বাসিন্দা। কিছু দিন আগে তিনি তার শ্বশুরবাড়ি হবিগঞ্জ সদরে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে তার প্রচ- শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। দ্রুত তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে করোনা সন্দেহে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর