রবিবার, ৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

গাছে গাছে লিচু

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

গাছে গাছে লিচু

চট্টগ্রামের বাঁশখালী মৌসুমি ফল লিচুর সুবাসে ভরে উঠছে। বাঁশখালীর সেই বিখ্যাত কালীপুরের লিচুতে ভরপুর প্রতিটি বাগান। গাছে গাছে ঝুলছে লাল রঙের টসটসে লিচু। ঝুপড়ি গাছগুলোর শাখা-প্রশাখায় লিচু আর লিচু। করোনার প্রকোপে এ অঞ্চলে পাইকারদের আনাগোনা কম থাকায় লিচু গাছতলায় বেশি সময় ব্যয় করছেন বাগান মালিকরা। প্রকৃত বাজার দর পাওয়া নিয়েও বাগান মালিকদের শঙ্কা আছে। খুচরা বাজার টার্গেট করেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে ধারণা করছেন চাষিরা।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার বলেন, এবার বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমিতে লিচু গাছ আছে। এখানকার লিচুর চাহিদা প্রচুর। চাষিদের মধ্যে দর পাওয়ার দুশ্চিন্তা থাকলেও মনে হচ্ছে তেমন প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, কালীপুরে ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর সামান্য আবাদ বেড়েছে। প্রতি শতকে একটি গাছ অনুপাতে এক হেক্টরে ২৪৭টি গাছ আছে। এখানে চায়না থ্রি জাতের লিচুর চেয়ে কালীপুরের বিখ্যাত স্থানীয় জাতের লিচুর চাষ বেশি হয়। এবার করোনাসহ নানাবিধ পরিস্থিতিতেও প্রতিটি বাগানে ফলন ভালো হয়েছে, লিচুর রংও ভালো। তবে আরও কীভাবে ভালো ফলন করা যায়, সে বিষয়েও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

কালীপুরের সবচেয়ে বড় বাগানের মালিক জালাল উদ্দিন ঝিনুক বলেন, ‘আমাদের তিনটি বাগানে প্রায় ১ হাজার লিচু গাছ আছে। গহিন পাহাড়ে সৃজিত বাগানগুলোতে প্রচুর লিচু ধরেছে। লিচু এখন প্রায় শেষের পথে। তবে লকডাউনের কারণে তেমন দাম পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

পাইকার লিচু ব্যবসায়ী আবু তালেব বলেন, দেশের এমন পরিস্থিতিতে লিচু এবার বাইরে বিক্রি করা নিয়ে শঙ্কায় আছি। খুচরা বাজারেই এবার সব লিচু বিক্রি করব। লিচু বাগান নেওয়ার পর বাগান পাহারায় শ্রমিক দিতে হয়েছে। আনুষঙ্গিক কিছু খরচও বেড়েছে। বিগত বছরে ছোটবড় হিসেবে প্রতি একশ লিচু ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এবারও ভালো বিক্রি হবে বলে জানান তিনি।

বাঁশখালীর বাসিন্দা সংগঠক রাহুল দাশ নয়ন বলেন, কালীপুরের লিচু সারা দেশেই বিখ্যাত। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও প্রচুর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা এসে এখানকার লিচু কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করে। একই কথা বললেন সুবল বড়ুয়াও। বাঁশখালী কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পুঁইছড়ি, চাম্বল, জলদী, কালীপুর, বৈলছড়ি, সাধনপুরে সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কালীপুরেই ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২৪৭টি করে গাছ আছে। ব্যবসায়িকভাবে উৎপাদনে চায়না-থ্রি ও চায়না-টু জাতের লিচু বেশি বিক্রি হলেও বাঁশখালীতে স্থানীয় জাতের লিচু চাষ হয় বেশি। যে কারণে কালীপুরের লিচুর চাহিদাও আছে দেশজুড়ে। চায়না থ্রি জাতের লিচুর শাঁস বড়, বিচি ছোট। ফলনও আসে দেরিতে। এখানকার স্থানীয় জাতের লিচু শাঁস ও বিচি ছোট হলেও আগেভাগেই ফলন আসে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর