বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

চলছে জোনভিত্তিক লকডাউন

পূর্ব রাজাবাজার পুরোপুরি লকডাউন, কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ থাকবে সেনা টহল

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলছে জোনভিত্তিক লকডাউন

রাজাবাজারে গতকাল সতর্কতামূলক কার্যক্রম (বামে) নারায়ণগঞ্জে পুলিশের তৎপরতা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীতে লকডাউন শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। করপোরেশনের আওতাধীন ইন্দিরা রোড-সংলগ্ন পূর্ব রাজাবাজারকে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে লকডাউন ঘোষণা করে ডিএনসিসি। পূর্ব রাজাবাজারের সব কটি প্রবেশ ও বহির্গমন পথ বন্ধ করে কঠোর নিরাপত্তা বসানো হয়েছে। আইএসপিআর জানিয়েছে, লকডাউন কার্যকর করতে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় সেনাটহল জোরদার করা হবে। পূর্ব রাজাবাজার ছাড়াও দেশের আরও কয়েকটি এলাকায় ছোট ছোট পরিসরে লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, কক্সবাজার পৌরসভা, টেকনাফ ও উখিয়া এবং বান্দরবান পৌরসভা ও রুমা উপজেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালে মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। গতকাল পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ব রাজাবাজারের আটটি প্রবেশপথ ও সাতটি বহির্গমন পথ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। একটি পথ খোলা রাখা হয়েছে শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার গতকাল জানান, লকডাউন কার্যকরে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তারা মানুষকে বোঝাতে চান, যদি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে করোনাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ জন্য কঠোরভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আপাতত ১৪ দিন চলাচল বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কিন্তু এর পরও যদি দেখা যায় এটি নিয়ন্ত্রিত হয়নি, তাহলে ২১ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি দিয়েছিল। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ওই ছুটিতে খুব একটা ফল আসেনি। বরং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস। এ অবস্থায় কভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন এলাকাকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করে লকডাউনে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তবে সেই প্রস্তাব এখন পর্যন্ত অনুমোদন না পেলেও সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তর সিটি করপোরেশন। এরই অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকা লকডাউন করে ডিএনসিসি। এদিকে এই লকডাউনে ভালো ফল এলে হয়তো ভবিষ্যতে রাজধানীর যেসব এলাকায় কারোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং যেগুলোকে রেড জোনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে, সেসব এলাকায় পর্যায়ক্রমে লকডাউন করা হতে পারে। এদিকে নোয়াখালীর ডিসি তন্ময় দাস জানিয়েছেন, তার জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা সদর, বিশেষ করে চৌমুহনী পুরোপুরি আক্রান্ত। এ অবস্থায় তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়রসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে বেগমগঞ্জ/চৌমুহনীকে লকডাউন করেন, যা গতকাল সকাল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। তিনি জানান, সারা জেলায় যেখানে কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় এক হাজার, সেখানে শুধু বেগমগঞ্জেই আছে প্রায় ৫০০ জন। এ কারণে এটিকে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করা হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন দুই দিন আগেই কক্সবাজার পৌরসভাকে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করেছেন। এরপর তিনি টেকনাফ ও উখিয়াকেও লকডাউনের আওতায় নিয়ে এসেছেন। একইভাবে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক জেলা সদর ও রুমা উপজেলা সদর লকডাউন করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর