বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

টেস্ট যেন সোনার হরিণ

সিরিয়াল পাওয়াই দায়, ব্যবস্থা নেই বেশির ভাগ জেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেস্ট যেন সোনার হরিণ

টেস্টের জন্য হাসপাতালে ভিড় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে এর টেস্ট যেন সোনার হরিণ হয়ে  গেছে। রাজধানীতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও পাওয়া যাচ্ছে না টেস্টের সিরিয়াল। দেশের বেশির ভাগ জেলাতেই নেই টেস্টের সুবিধা। যেসব বিভাগীয় শহরে আছে সেসবও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আবার কোনো কোনো জেলায় পিসিআর থাকলেও কিট দেওয়া হচ্ছে যৎসামান্য। এ কারণে টেস্টের পরিমাণ কম হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুসারে, বগুড়ায় দিন দিন করোনা নিয়ে সংকট আরও বড় হতে চলেছে। জেলায় গত দুই মাসে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েছে হু হু করে। ১ এপ্রিল প্রথম রোগী আক্রান্ত হওয়ার পর চলতি জুন মাসে জেলায় এখন করোনা আক্রান্ত রোগী প্রায় ১ হাজার। নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সাধারণ রোগীরা। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে সময়মতো কোনো রিপোর্ট এখন আর আসছে না। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে করোনাভাইরাসের নমুনা দিয়ে রিপোর্ট পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ৪ থেকে ৫ দিন। আবার অনেকে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও নমুনা দিতে না পেরে যাচ্ছেন বাড়ি।

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শফিক আমিন কাজল জানান, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে রোগী কম থাকলেও এখন রোগীর চাপ বাড়ছে। স্থানীয়ভাবে সংক্রমণও বাড়ছে। শুরুর দিকে রোগীর বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু এখন যে অবস্থা হয়েছে তাতে করে রোগীকেই হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। লাইনও বড় থাকছে। ভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে বলে নমুনা পরীক্ষাও দেরি হচ্ছে।

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, বগুড়ায় চিকিৎসকরা যতটা পারছেন দায়িত্ব পালন করছেন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বসানো হয়েছে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব। সেখানে দুটি প্লেটে দিনে মোট ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। এই ল্যাবে জনবল যেমন কম রয়েছে তেমনি আবার জেলার ১২টি উপজেলা থেকে নমুনা আসতে শুরু করেছে। যে কারণে জেলায় করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বেড়ে যাওয়ার কারণে রিপোর্ট পেতেও বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, বেশকিছু নমুনা জমে আছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। এত নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে যে চিকিৎসকরা হাঁপিয়ে উঠছেন। দিনাজপুরে করোনাভাইরাসের নমুনা টেস্টে জট সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটায় করোনা নমুনা টেস্ট করার জন্য আরেকটি ল্যাবের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ৪টি জেলার করোনা নমুনা সংগ্রহ অধিক হলেও সবগুলোর টেস্ট প্রতিদিন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি ল্যাব স্থাপনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলে জানান দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল কুদ্দুছ। অন্যদিকে, রোগী বাড়ার সঙ্গে ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ বেড সংকট দেখা দেবে। প্রতিদিন দিনাজপুর ল্যাবে ১৮৮টি টেস্ট হলেও নমুনা আসছে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০০ জনের। গতকাল পর্যন্ত ১৪১০টি করোনার পরীক্ষার নমুনা জমা রয়েছে।

করোনাভাইরাসের টেস্ট নিয়ে সার্বিক বিষয় সম্পর্কে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আবদুল কুদ্দুছ জানান, এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ দিনাজপুরে পিসিআর ল্যাবে দিনাজপুর ছাড়াও ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী জেলার করোনা নমুনার টেস্ট করা হয়। এখানে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৮টি টেস্ট করা সম্ভব হয়। কিন্তু প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০০ জনের করোনার নমুনা আসে। এতে অনেক নমুনা জমা থেকে যায়। টেস্টেও হিমশিম খেতে হয়। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে এ পর্যন্ত এই ল্যাবে ৭৭০০ নমুনার টেস্ট করা হয়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১৪১০টি করোনার পরীক্ষার নমুনা জমা রয়েছে। তিনি জানান, চাপ কমাতে এখন থেকে যেসব করোনা সন্দেহের রোগীর কোনো লক্ষণ না থাকলে পরীক্ষা করা হবে না। আবার কোনো করোনা আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ না থাকলে দ্বিতীয়বার আর নমুনা নেওয়া হবে না। বরং ওই রোগীকে ১০ দিন পর ছেড়ে দেওয়া হবে।

বরিশালে সিভিল সার্জন কার্যালয়, সিটি করপোরেশন, জেনারেল হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করোনা উপসর্গ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে তারা নমুনা সংগ্রহ করছেন না। এ কারণে করোনা উপসর্গ রোগীর নমুনা সংগ্রহের চাপ পড়ছে শেরেবাংলা মেডিকেলে কর্তৃপক্ষের ওপর। প্রতিদিন গড়ে ৩০০ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের চাহিদা থাকলেও দেড়শ জনের নমুনা সংগ্রহ করতে পারছে তারা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক টেকনিশিয়ান না থাকায় ভর্তিকৃত রোগী ছাড়া আর কারোর নমুনা সংগ্রহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। বরিশাল বিভাগে প্রতিদিন সংগ্রহকৃত নমুনার প্রায় অর্ধেকের করোনা পরীক্ষা হয় শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে। বাকি নমুনা পাঠানো হয় ঢাকার আইইডিসিআরে।

গত চার দিন ধরে করোনা নমুনা পরীক্ষার কোনো রিপোর্ট আসেনি জয়পুরহাটে। সর্বশেষ রিপোর্ট পাওয়া গেছে গত শনিবারে। শনিবারে জয়পুরহাট জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪২ জন। এ পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলায় করোনায় কোনো রোগী মারা যায়নি। জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা জানান, জয়পুরহাটে সংগৃহীত কভিড-১৯ রোগের নমুনা সংগ্রহ করে তারা ঢাকা এবং বগুড়া ল্যাবে  পাঠান। এক হাজারের বেশি নমুনা দেওয়া রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জটের কারণে ঠিকমতো রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় মোট আক্রান্তে সংখ্যা ২১২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১৫ জন।   

ময়মনসিংহ বিভাগে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এখন এই সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ৭৯৮-এ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার পরিধি বাড়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। পিসিআর ল্যাবের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক সালমা আহমেদ জানান, চলতি মাসের শুরু থেকে দুটি ল্যাবের তিনটি মেশিনে আট ধাপে প্রতিদিন ৭৫২টি পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। আর টেকনোলজিস্টরা প্রতিদিন সাত থেকে আটশ নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে নিয়ে আসছেন। এখন দুইশর মতো নমুনা জমা আছে। তিনি জানান, গত দুই মাস আমরা প্রচন্ড চাপে ছিলাম। নমুনা জট যেমন লেগেছিল তেমনি হিমশিমও হয়েছে ল্যাবের চিকিৎসক থেকে কর্মচারী পর্যন্ত। এমনকি চাপ সামলাতে না পেরে ঢাকাতেও অনেক নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ জেলা শাখার বিএমএর সভাপতি ডা. মতিউর রহমান ভুঁইয়া জানান, ‘বিভাগের এক স্থানে করোনা পরীক্ষাগার না রেখে প্রতিটি জেলায় একটি করে পরীক্ষাগার করা প্রয়োজন। যত বেশি পরীক্ষা ততই সাবধানতা।’

গাজীপুরে পিসিআর দুটি ল্যাবে হচ্ছে করোনা পরীক্ষা। জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য গত ২ জুন গাজীপুরের কাশিমপুরের জিরানী এলাকার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রথম পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা করা হয়। এখানে প্রতিদিন ১৮৪টি করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়। এখানে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে নির্ধারিত ৫০০ টাকা নেওয়া হয়। ল্যাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।

এ ছাড়া গত ৭ জুন গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এখানে করোনা পরীক্ষার জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। দুটি ল্যাবেই করোনা নমুনা পরীক্ষা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হয়।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান জানান, জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে দুটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল  কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রতিদিন ১৮৪টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। আর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ কভিড-১৯  ডেডিকেটেড হাসপাতালে স্থাপিত ল্যাবে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিদিন ৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এটি পুরোপুরি চালু হলে এখানেও প্রতিদিন ১৮৪টি করে নমুনা পরীক্ষা করা যাবে।

বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জেলা ভোলায় শিগগিরই করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন হতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার ল্যাব ভোলায় এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জনবল পাওয়া সাপেক্ষে অতি দ্রুত ভোলা সদর হাসপাতালে স্থাপিত এই ল্যাব চালু হবে। তখন আর করোনা পরীক্ষার জন্য ঢাকা কিংবা বরিশালে নমুনা পাঠানোর প্রয়োজন হবে না। উল্লেখ্য, গত ১ মাস আগে ভোলা সদর হাসপাতালে সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। এখানে নমুনা সংগ্রহ করে ওই নমুনা ঢাকা কিংবা বরিশাল থেকে পরীক্ষা শেষে রিপোর্ট আসতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। ভোলার সিভিল সার্জন ডাক্তার রতন কুমার ঢালী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিরাজগঞ্জে কভিড-১৯ সন্দেহে রোগীর নমুনা সংগ্রহের চেয়ে পরীক্ষা কম হচ্ছে। শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে প্রতিদিন মাত্র ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এ কারণে একজন ব্যক্তি নমুনা দিলে ফলাফল পেতে ৫-৭ দিন লেগে যাচ্ছে। এতে করোনা আতঙ্ক নিয়েই থাকছে নমুনা দেওয়া ব্যক্তিরা। এ অবস্থায় সচেতন মহল যাতে প্রতিদিন অন্তত ৩০০ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা যায় সে জন্য আরও পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম জানান, ১৯ মে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করা হয়। এর দুই দিন পর থেকে পরীক্ষা শুরু করা হয়। পরীক্ষার জন্য ৮ জন প্রভাষক, ৮ জন ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ মোট ৩১ জনের টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্যাকেটজাত নমুনা নিয়ে আসার পর পরীক্ষা করা হয়। প্রতিদিন দুই শিফটে নমুনা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও লোকবল সংকটের কারণে এক শিফটে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের (কুমেক) ল্যাবে প্রতিদিনই করোনার দুই শতাধিক নমুনা অপেক্ষার তালিকায় চলে যাচ্ছে। জমা থাকা নমুনার সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এতে ভোগান্তি বাড়ছে নমুনা দেওয়া  রোগীদের। কুমেক সূত্রে জানায়, কুমেকে বর্তমানে দুই শিফটে প্রতিদিন ১৮০-১৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। নমুনা আসে প্রতিদিন সাড়ে তিনশ থেকে চারশটি। প্রতিদিনই দুই শতাধিক নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। গত ২৯ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে আনুষ্ঠানিক করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। উদ্বোধনের সময় এক সঙ্গেই পাঁচ হাজার কিট ঢাকা থেকে দেওয়া হয়। পরবর্তী পর্যায়ে আরও এক হাজার নয়শটি দেওয়া হয়। গত ৫ জুন থেকে কুমেকে কিট সংকট দেখা দেয়। কিট সংকটের কারণে ৫ জুন থেকে ৭ জুন এই তিন দিন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে করোনার পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ৭ জুন বিকালে ঢাকা থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে এক হাজার ৪৪০টি কিট এসে পৌঁছে। তিন দিন বন্ধ থাকার পর ৮ জুন থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়। মানবাধিকার সংগঠক আলী আকবর মাসুম বলেন, উপসর্গ নিয়ে যিনি নমুনা জমা দিয়েছেন তিনি অপেক্ষা করছেন ফলাফলের জন্য। এদিকে যিনি পজিটিভ তিনিও ২য় বার নমুনা দিয়ে অপেক্ষায় থাকছেন। কুমিল্লার ল্যাবে মেশিন ও জনবল না বাড়ালে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোস্তফা কামাল আজাদ জানান, পিসিআর মেশিন একটি। জনবলেরও সংকট রয়েছে। মেশিন জনবল বাড়লে সমস্যা কেটে যাবে। বাগেরহাট জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষায় কোনো মেশিন না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হচ্ছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে। বাগেরহাট জেলায় গতকাল পর্যন্ত মাত্র ৮৭৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেলের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার পর ৪৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। খুলনা মেডিকেলের পিসিআর ল্যাবে সেই নমুনা জমা দিয়ে আইইডিসিআর থেকে তার ফলাফল জানাতে সময় লাগছে ৭ থেকে ১০ দিন। এই সময় ক্ষেপণের কারণে পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেওয়া করোনা পজিটিভরা না জেনেই পরিবারসহ অন্য লোকজনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন এমন তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য কোনো ভেন্টিলেশন মেশিন নেই। সে কারণে করোনার চিকিৎসা নিতে কেউ হাসপাতালে আসছেন না বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর