বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্বে আক্রান্ত ৭৪ লাখ

সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ১৫ দেশ

প্রতিদিন ডেস্ক

মহামারী করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ৪ লাখ ১৫ হাজার ছাড়াল। আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় ৭৪ লাখ। এদিকে ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এই ভাইরাসের দাপট আরও বেড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে। এর মধ্যে ভারত আক্রান্তের দ্বিতীয় ধাপে পা দিতে চলেছে। এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আক্রান্তের দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল ১৫টি দেশের মধ্যে চলে এসেছে ভারত।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ব্রাজিলে ১ হাজার ১৮৫ জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ৯৩ জন, মেক্সিকোতে ৩৫৪ জন, যুক্তরাজ্যে ২৮৬ জন, ভারতে ২৪৬ জন, রাশিয়ায় ১৭১ জন, পাকিস্তানে ১০৫ জন। এদিন ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে মারা যান ৪ হাজার ৭৩২ জন এবং নতুন করে আক্রান্ত হন ১ লাখ ২১ হাজার ৭১ জন। আক্রান্তের দ্বিতীয় ধাপে ভারত : এ পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৩ জন। আরা মারা গেছেন ৭ হাজার ৭৫০ জন। এ অবস্থায় দেশটিতে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির সিকিউরিটিজ রিসার্চ ফার্ম নমুরা এক সমীক্ষায় বলেছে, করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল ১৫টি দেশের মধ্যে চলে এসেছে ভারত। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বা সেকেন্ড ওয়েভের ঝুঁকি প্রবল-এমন দেশগুলোর তালিকায় প্রথম সারিতেই রয়েছে ভারত। সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়, অর্থনীতির বড় অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে- এমন ১৭টি দেশে সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউ আসার লক্ষণ নেই। ১৩টি দেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সেকেন্ড ওয়েভের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই দেশগুলোর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। তবে ১৫টি দেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সেকেন্ড ওয়েভের ঝুঁকি প্রবল। আর এসব দেশের তালিকায় রয়েছে ভারত। ভারতের সঙ্গে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত আয়ের জনসংখ্যার দেশগুলোর মধ্যে এই জোনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, চিলি, পাকিস্তানের মতো দেশগুলো। এ ছাড়া সংক্রমণের তালিকায় চীনের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ। আক্রান্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এখন ১৯ নম্বরে। উহানকে ছাড়াল মুম্বাই : কভিড-১৯ শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় চীনের উহান শহরকে ছাড়িয়ে গেছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই। ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুর খবরে গতকাল বলা হয়, মুম্বাইয়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা মঙ্গলবার ৫১ হাজার পেরিয়ে গেছে, যা চীনের উহানের চেয়ে ৭০০ বেশি। শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় সোমবার চীনকে ছাড়িয়ে যায় মহারাষ্ট্র। ভারতের এই রাজ্যে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার। আর চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ হাজার ১৯৮ জন বলে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাত্তে দেখা গেছে। পাকিস্তানে লকডাউনের আহ্বান : পাকিস্তানে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার দেশটিতে অন্তর্বর্তী লকডাউন ব্যবস্থা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত মঙ্গলবার দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, দেশটিতে বিধিনিষেধ শিথিল করার পর করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। পাঞ্জাবের প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদকে এক চিঠিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ‘আজ পর্যন্ত লকডাউন তুলে নেওয়ার কোনো প্রয়োজনীয় শর্ত পাকিস্তান পূরণ করেনি।’ চিঠিতে বলা হয়, মানুষ এখনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য আচরণগত পরিবর্তন ও বারবার হাত ধোয়ার মতো অভ্যাস রপ্ত করেনি। তাই নির্ধারিত অঞ্চলগুলোয় অন্তর্বর্তী লকডাউনের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্তর্বর্তী লকডাউনের চক্রে দুই সপ্তাহ খোলা ও দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানে মোট পরীক্ষায় ২৫ শতাংশই পজিটিভ বলে শনাক্ত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে সংক্রমণের উচ্চমাত্রা দেখা গেছে। দেশটির হাসপাতালগুলোয় রোগী রাখার সক্ষমতা কম বলে অনেক রোগীকে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোম আধানোম গেব্রিয়াসুস বলেন, সোমবার ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে যে ১ লাখ ৩৬ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের ঘটনা। এর বেশির ভাগই দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকার মানুষ। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, তারা দেশটিতে ১ লাখ ৮ হাজার ৩১৭ জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করেছেন এবং ২ হাজার ১৭২ জন মারা গেছেন। দেশটিতে পরীক্ষার হার সীমিত। পরীক্ষা বেশি হলে সংক্রমণের হার আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর