বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

রোগীরা কেন রাস্তায় ঘুরছে : হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা দুর্যোগে দেশের হাসপাতালগুলোর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) বেড ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ করে হাই কোর্ট বলেছে, সবকিছু যদি ঠিকভাবে মনিটরিং করা হয় তাহলে রোগীরা কেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালের রাস্তায় ঘুরছেন? এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এমন মন্তব্য করে। এরপর আদালত এ রিটের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ জুন দিন নির্ধারণ করে।

এদিকে হাই কোর্টের নির্দেশে দেশের আইসিইউর তথ্য জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইন উপদেষ্টা (উপসচিব) দেবাশীষ নাগের স্বাক্ষরে হাই কোর্টে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরুরি এই পরিস্থিতিতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে শুধু কভিড সার্ভিসের জন্য ১৭টি হাসপাতালে ২৩৫টি আইসিইউ ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে দেশের সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট আইসিইউর সংখ্যা ৭৩৩টি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। রিটকারী আইনজীবী শুনানিতে আদালতকে বলেন, করোনার মধ্যে রোগীরা আইসিইউ বেড পাওয়ার আশায় এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে হয়রান হচ্ছেন। করোনাকালে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার জন্য যেসব হটলাইন নম্বর রয়েছে সেগুলোতে আমি নিজেও চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রথম চারটি নম্বর কল রিসিভ করেনি। পঞ্চম নম্বরে কল দেওয়া হলে তা রিসিভ করা হয়। কিন্তু রোগী ভর্তির জন্য কোনো আইসিইউ বেড খালি রয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো তথ্য না দিয়ে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সুতরাং এর দ্বারা বিষয়টি স্পষ্ট যে, সাধারণ রোগীরা ওইসব হটলাইনে কল করে দেশের কোনো হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি রয়েছে কিনা, তা জানতে না পেরে হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে হয়রান হচ্ছেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সারা দেশে সরকারি হাসপাতালে ৭৩৩টি আইসিইউ বেডের তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিকালে তারা আদালতকে জানান, আইসিইউ বেডসংখ্যা বৃদ্ধি করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এটি সময়সাপেক্ষ। কেননা আইসিইউ বেড তৈরি করলেই হবে না, এর পরিচালনার জন্য দক্ষ লোকবলেরও প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়াও বর্তমানে আইসিইউ বেডগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোলরুম থেকে সরকারিভাবে সবকিছুই মনিটরিং করা হচ্ছে। এরপর আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ করে বলে, যদি সবকিছু মনিটরিং করা হয়েই থাকে তাহলে রোগীদের এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে কেন?

সর্বশেষ খবর