শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
পূর্ব রাজাবাজার লকডাউন

খাবার পৌঁছে যাচ্ছে দরজায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাবার পৌঁছে যাচ্ছে দরজায়

তৃতীয় দিনের মতো কঠোরভাবেই লকডাউন চলছে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়। এলাকাবাসীর চলাচল নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু এরপরও ‘বিশেষ প্রয়োজনের’ কথা বলে অনেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছেন। উপযুক্ত কারণ না থাকায় তাদের অনেককে ফেরত যেতে হয়েছে। যাদের খাবার বা বাজারের প্রয়োজন হচ্ছে, তাদের ফোন কলেই দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে চাহিদামতো নিত্যপণ্য। গতকাল এমন অসংখ্য পরিবারের কাছে খাদ্য ও নিত্যপণ্য পৌঁছে দিয়েছেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান। শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, পূর্ব রাজাবাজার থেকে কেউ বের হতে বা প্রবেশ করতে পারছেন না। পুলিশ বলছে, আগের দুই দিন এলাকাবাসী বের হওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এ কাজে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক। এর ফলে প্রবেশ বা বের হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা না করে লকডাউন মানতে এলাকাবাসী অনেকটাই অভ্যস্ত হচ্ছেন। পূর্ব রাজাবাজার এলাকার চারদিক ঘুরে দেখা গেছে, বাইরে বের হওয়ার তেমন কোনো চেষ্টা ছিল না এলাকাবাসীর মধ্যে। এরপরও ‘বিশেষ প্রয়োজনের’ কথা বলে অনেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছেন। উপযুক্ত কারণ না থাকায় অনেককে ফেরত যেতে হয়েছে। এদিকে এলাকাবাসীর সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজারের ভ্যান এলাকায় প্রবেশ করেছে। ভ্যানগুলো এলাকাটির মধ্যে প্রতিটি গলিতে ঘুরতে থাকে। এলাকাবাসী প্রয়োজনীয় পণ্য সেখান থেকে কিনতে পারছেন।

কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এলাকাবাসী লকডাউন মানতে অভ্যস্ত হচ্ছেন। তারা বুঝে গেছেন, কোনোভাবেই এলাকা থেকে বের বা প্রবেশ হওয়া যাবে না। এরপরও কিছু কিছু মানুষ বের হওয়ার চেষ্টা করেন নানা উছিলায়। একজন বৃদ্ধাকে দেখেছি ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন। তাকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করি। বৃদ্ধা জবাব দেন, জর্দার খোঁজে তিনি বেরিয়েছেন। তাকে আমি নিজে বলেছি, আপনি ঘরে ফিরে যান। আপনার ঘরে আমি নিজে গিয়ে জর্দা দিয়ে আসব। পরে আমি নিজেই জর্র্দা দিয়ে এসেছি। শুধু তাই নয়, গত দুই দিনে তিন শতাধিক পরিবারকে বাজার, খাবারসহ নানা নিত্যপণ্য সরবরাহ করা হয়েছে। তাদের ফোন পাওয়া মাত্র প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে তাদের বাসার দরজায় পৌঁছে দিয়েছি। বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সেখানে কর্তব্যরত শেরেবাংলা নগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ওয়াজেদ বলেন, অনেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছেন। উপযুক্ত কারণ মনে না হওয়ায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ এলাকায় বসবাসকারী সংবাদকর্মী, ডাক্তার ও নার্সরা প্রবেশ এবং বের হতে পারবেন। এদিকে যারা (সাংবাদিক, ডাক্তার ও নার্স) এলাকাটিতে প্রবেশ করবেন ও বের হবেন, তাদের আইবিএ হোস্টেলের পাশে খোলা থাকা জরুরি গেটটিতে নাম পরিচয় লিখিয়ে যেতে হবে। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন এলাকাকে রেড (লাল) কিংবা ইয়েলো (হলুদ) জোন নির্ধারণ করে লকডাউনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, কোনো এলাকায় প্রতি এক লাখ বাসিন্দার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০-৪০ জন হলে সেই এলাকা রেড জোন হিসেবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। প্রতিটি এলাকা ম্যাপিং করে লকডাউন করা হবে। পূর্ব রাজাবাজারে মঙ্গলবার (৯ জুন) মধ্যরাত থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর