রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
সানেমের বাজেট বিশ্লেষণ

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা দরকার ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও সক্ষমতার অভাব নিয়ে আলোচনা করা দরকার ছিল। এমন মন্তব্য করে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড.  সেলিম রায়হান বলেছেন, অতীতের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় রয়েছে। এক্ষেত্রে বাজেট বাস্তবায়নের ওপর, বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বাস্তবায়নের ওপর নিয়মিত তথ্য প্রদান করা উচিত। গতকাল সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) কর্তৃক ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক। স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দকৃত বাজেটের সঠিক ব্যবহারের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের সুপারিশ জানানো হয় সানেমের বাজেট পর্যালোচনায়। এ ছাড়া কভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাওয়া এবং জনগণের কাছে সেটি সহজলভ্য করে তোলার জন্যও বাজেটে বরাদ্দ রাখা উচিত ছিল বলে আলোচনায় উঠে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হানের নেতৃত্বে সানেমের প্যানেল বাজেটে আলোচনায় আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও সানেমের গবেষণা ফেলো মাহতাব উদ্দিন ও সানেমের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ইশরাত শারমীন। ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ জুমের মাধ্যমে এ বাজেট পর্যালোচনায় প্রায় ৭০ জন অর্থনীতিবিদ, গবেষক, শিক্ষক, উন্নয়ন কর্মী, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী যুক্ত ছিলেন। সূচনা বক্তব্যে ড. সেলিম রায়হান বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজেট প্রণয়নের চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর আলোকপাত করে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট কভিড-১৯ মোকাবিলায় যেমন হওয়া দরকার ছিল তেমন হয়নি। বাজেট অন্যান্য বারের মতো গতানুগতিক ধারাতেই প্রণয়ন করা হয়েছে, যেটি বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যথেষ্ট নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন যারা তাদের জন্য বিশেষ কিছু নেই এবং এক্ষেত্রে আরও বিস্তৃতভাবে নগদ ও খাদ্য সহায়তা, বেকার ভাতা, ইত্যাদির পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেত বলে সানেমের আলোচনায় উঠে আসে। ড. রায়হান সানেমের প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ (স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত) তিন বছর দেরি করানো দরকার, কারণ এলডিসি উত্তরণ হয়ে গেলে, বাংলাদেশ বেশ কিছু বাণিজ্য সুবিধা হারাবে, যা অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলতে পারে। ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, বাজেটে শহরের ভাসমান দরিদ্রদের জন্য তেমন কিছুই নেই। অন্যদিকে যুব এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্যও যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, প্রণোদনা দেওয়ার পরও পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে। বাজেটে নারীদের জন্য, বিশেষ করে বর্তমান সংকটে দুরবস্থায় পড়া নারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট তেমন কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। ড. বিদিশা আরও বলেন, জাতীয় পর্যায়ে কৃচ্ছ্রতা সাধন যেমন, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কর্তন ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় ভাতা কর্তন, ইত্যাদি বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার ছিল।

সর্বশেষ খবর