সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কৃষিতে উদ্ভাবনী ও নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই

----- শাইখ সিরাজ

কৃষিতে উদ্ভাবনী ও নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই

বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতি সাংবাদিক শাইখ সিরাজ বলেছেন, খাতভিত্তিক বাজেট বরাদ্দের হিসাবে কৃষি খাতে বরাদ্দের পরিমাণ এ বছর বেড়েছে। তবে করোনাকালীন সংকটে যে উদ্ভাবনী ও নতুন পরিকল্পনা দেখার আশা করেছিলাম তার প্রতিফলন প্রস্তাবিত বাজেটে দেখা যায়নি। করোনায় একমাত্র কৃষি বাঁচিয়ে রেখেছে। এই সংকট মুহূর্তে আগামী তিন বছরের কৃষি খাতকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে- তার একটি বিস্তর পরিকল্পনা থাকা উচিত ছিল প্রস্তাবিত বাজেটে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে শাইখ সিরাজ বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি খাতে তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আসতে হলে নতুন ভাবনা থাকা উচিত। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির প্রশ্নে নতুন কোনো উদ্ভাবনী উদ্যোগ নেই, করোনাকালীন এই সংকটে যা জরুরি ছিল। এ ছাড়া দরিদ্র কৃষক তথা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আনার জন্য কোনো সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ আসেনি। কৃষককে একটি সুপরিকল্পিত বাজার-ব্যবস্থায় আনা না গেলে তারা বার বার ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। তিনি বলেন, প্রথাগত কৃষিনির্ভরতা থেকে সারা বিশ্বই এখন নতুন ও উদ্ভাবনী কৃষির দিকে ঝুঁকছে। মাইক্রোগ্রিন নামে পরিচিত শহুরে ছাদ কৃষির ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে শহরের বাড়ি ও কারখানার ছাদে এসব কৃষি উৎপাদন করা হয়। এতে বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, হোটেলে ব্যবহার করা হয় এমন সবজি ও শাক চাষ করা হয়। রপ্তানিতে অন্যতম একটি পণ্য হিসেবে এই ছাদ কৃষি জায়গা নিতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের গ্রামীণ কৃষকরা পণ্যের দর পান না। তাদের জন্য ১৯০টি কৃষি সেন্টার করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু একই সেন্টারে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য কীভাবে আসবে তার কোনো পরিকল্পনা নেই। মধ্যস্বত্বভোগী যদি থাকে তাতে কৃষকের কোনো লাভ হবে না। তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের যে শ্রমিকরা আছে তাদের দেশে ফিরিয়ে না এনে সেখানে কৃষি প্রকল্পে কাজে লাগানো যেতে পারে। দুবাই, ওমানে অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকরা জমি লিজ নিয়ে এমন প্রকল্প করেছে। সরকার থেকে জমির মালিক ৭০ শতাংশ প্রণোদনা পায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব তারা এজন্য কূটনৈতিক যোগাযোগ করতে পারে। তাতে বাংলাদেশের কৃষিও অনেক উপকৃত হবে। তথ্যপ্রযুক্তি থেকে শুরু করে বিজ্ঞানমুখী উন্নয়ন, সড়ক অবকাঠামো, বাণিজ্যনীতি সবকিছুর সঙ্গেই কৃষি ও কৃষকের ভাগ্য জড়িত।  সে কারণে বাজেট বাস্তবায়নের কৌশলের ওপর নির্ভর করছে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকগুলো। এ বিষয়গুলোয় সরকারের সুগভীর বিবেচনা থাকবে বলে আশা রাখি।

সর্বশেষ খবর